লেখক

অনেক আগের কথা। এক গাঁয়ে এক কিশোরী বাস করতো। তার নাম কবিতা। সে খুব চঞ্চল প্রকৃতির ছিলো।সারাদিন হইচই করতো। বেশিরভাগ সময় বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলায় মেতে থাকত। সে খুব কম পড়াশুনা করত। কিন্তু পরীক্ষা এলেই তার পড়াশুনার মাত্রা বেড়ে যেত। তখন সবকিছু এলোমেলো থাকত শুধুই পড়াশুনা ছাড়া।

রেজাল্ট খুব একটা খারাপ হতো না। এভাবে স্কুল কলেজ পার করলো। সারাদিন এটা সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকত। হঠাৎ এক ভদ্রলোকের সাথে কবিতার আলাপ হলো। ভদ্রলোকটি কবিতার সাথে আলাপ হওয়ার পর থেকে পরিচিত হওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছেন। কবিতা তো পাত্তাই দিলো না।


ভদ্রলোকটির নাম পিয়াস। উনি বারবার কবিতার সাথে আলাপ করতে চাইতেন।কিন্তু কবিতা খুব বিরক্ত হতো। উনার কথা শুনলেই কবিতা রেগে যেত । যদি কোনো কথা হতো কবিতা অপমান ছাড়া আর কোনো কথা বলত না। এতো অপমান করত। পিয়াস চুপ করে সেই অপমান শুনতেন। কিছুই বলতেন না।

এরকম অনেকবার অপমানিত হয়েছেন। আর কত? এই রকম গেলো বেশ কিছু দিন। অথচ পিয়াস কবিতার সেই একইভাবে আলাপ করতে চাইতো। কবিতাও একইভাবে বিরক্ত হতো। ভদ্রলোকটি(পিয়াস) একজন চাকুরিজীবী। আর কবিতা ছাত্রী। ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করছে। পিয়াস কবিতাকে একইভাবে বিরক্ত করে যাচ্ছেন। কবিতার কাছে আর কত অপমানিত হতে হবে কে জানে?

হঠাৎ একদিন কবিতার বাবা অসুস্থ হয়ে গেলেন। তাকে শহরে নিয়ে যাচ্ছে পরিবারের লোকজন। শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করলেন। ডাক্তার আসার পর কবিতার বাবাকে দেখছেন। কবিতা যেন হতভম্ব হয়ে আছে। কিছুই বলছে না। শুধুই তার বাবার দিকে চেয়ে আছে।

আর অপেক্ষা করছে ডাক্তার কিছু বলছেন না কেনো? কবিতা একবার ডাক্তারকে দেখে আরেকবার তার বাবাকে দেখে। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার কবিতাকে বলছেন উনার ছেলেমেয়ে কয়জন।কবিতা কিছু বলছে না। পরে পরিবারের একজন বললো উনার এক মেয়ে। সবাই অবাক হয়ে গেলো। ডাক্তারকে বলছেন কেনো ডাক্তার। কী হয়েছে? ডাক্তার বললেন উনার মেয়েকে সামলান। উনি আর বেঁচে নেই। উনি স্ট্রোক করেছেন এবং কয়েকঘণ্টা আগেই মারা গেছেন। আমাদের কিছু করার নেই।

আপনারা উনাকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন। এই বলে ডাক্তার চলে গেলেন। একে একে সব আত্মীয় স্বজন আসলো। একটা এম্বুল্যান্স করে কবিতার বাবাকে বাড়ি নিয়ে গেলেন। কবিতার কী অবস্থা? এতো কান্নাকাটি করছে। এতো চিৎকার করছে। যেন সেই চিৎকারেই তার বাবাকে ফিরিয়ে নিয়ে আনবে। পুরো বাড়িটাই কান্নাই জর্জরিত হয়ে আছে। এই দিকে কবিতা অজ্ঞান হয়ে গেলো। তার বাবাকে শ্মশানে নিয়ে গেলো। কবিতা কিছুই টের পেলো না। একসময় কবিতার জ্ঞান ফিরলো।কিন্তু সে কিছুই বলতে পারলো না।কান্নাকাটিও করছে না। এমনি বসে আছে। কয়েকঘণ্টা এমন ছিলো। পরে আবার অনেক কান্নাকাটি শুরু করল।

কবিতা আবার অজ্ঞান হয়ে গেলো। সে তিন থেকে চারদিন অজ্ঞান ছিলো। কবিতা তার বাবাকে প্রচন্ড ভালোবাসত।তার বাবার মৃত্যু তাকে প্রচন্ডভাবে আঘাত করেছে।৩-৪ দিন গেলো খাবারও খায় নি কবিতা।
পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। চিকিৎসা শুরু হলো। হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। ডাক্তার বললেন মেয়েটা তার বাবার মৃত্যুকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারে নি।

তাই এতোটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কিছুদিন পর ঠিক হয়ে যাবে। আরো কয়েকদিন পর কবিতা বাড়ি এলো। কিন্তু একদম চুপচাপ হয়ে গেলো। কারো সাথেই কবিতা কথা বলে না। বেশ কিছুদিন পর পিয়াসের সাথে আলাপ হলো। কিন্তু কবিতা পিয়াসের উপর বিরক্ত হলো না। আর অপমানও করলো না। কবিতা পিয়াসের সাথে স্বাভাবিকভাবেই কথা বললো। পিয়াস ভাবলো, কবিতা আমাকে অপমান করছে না কেনো? কি হয়েছে? কিছুই বুঝতে পারলো না। পিয়াস জানেন না যে কবিতার বাবা মারা গেছেন ।

পরে সব জানতে পারলেন। কেন যেন কবিতার প্রতি পিয়াসের একটা সহানুভূতি কাজ করল। পিয়াস সবসময় কবিতার খোঁজ নিতেন। কবিতা আর পিয়াসের উপর বিরক্ত হয় না। পিয়াস সবসময় কবিতার মনের খোঁজ নিতেন। কবিতাও যেন একটু ভরসা পেলো। ধীরে ধীরে কবিতা পিয়াসের কাছে সবকিছু শেয়ার করতে লাগল। পিয়াসও মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। কবিতার প্রতি পিয়াস যেন কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লেন।

পরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে গেলো। দুজন দুজনকে সবকিছু শেয়ার করত। কবিতা পিয়াসকে যতোটুকু খারাপ ভাবতো আসলে পিয়াস মোটেও খারাপ না। পিয়াস খুবই ভালো লোক। পিয়াস সবসময় চাইতেন কবিতাকে সময় দেওয়ার জন্য। কারণ কবিতা সবসময় নিজেকে একা ভাবত। পাশে থাকার মত কেউ ছিলো না।কবিতার জীবন যেন অন্ধকারে ডুবে আছে। তাই সে অসময়ে পিয়াসের সাথে বন্ধুত্ব হলো। কবিতা সবসময় তার বাবার কথা মনে করে কাঁদত। পিয়াস খুব খেয়াল করত। তাই পিয়াস সবসময়ই চাইত কবিতাকে ভালো রাখতে। এরকম সাত বছর পার হলো।

কিন্তু তাদের মধ্যে সেই বন্ধুত্বই রয়ে গেলো। তাদের মধ্যে প্রেম হলো না। পিয়াস একসময় চেয়েছিলো কবিতার সাথে প্রেমের সম্পর্ক করতে। কিন্তু কবিতা কখনো চায় নি। সে রাজিও হয় নি। কিন্তু দুজন দুজনের প্রতি খুব টান ছিলো। তাদের মধ্যে বেশ যোগাযোগও ছিলো। কবিতা কখন কোথায় যায়,কী করে? সব কিছু পিয়াসকে বলত। দেখতে দেখতে কবিতার পড়াশুনাও শেষ হয়ে গেলো। কবিতার প্রবল ইচ্ছে সে চাকুরী করবে। নিজের পায়ে দাঁড়াবে। পিয়াসের সহযোগীতা যেন কবিতার অনেক পরিবর্তন করে দিয়েছে। হঠাৎএকদিন পিয়াস কবিতাকে বললো তার বিয়ের কথাবার্তা চলছে। মেয়ে দেখা শেষ। কবিতা যেন চুপ হয়ে গেলো। কেন যেন, তার খুব কষ্ট হলো? কিন্তু প্রকাশ করলো না। কবিতা জিজ্ঞেস করল,

মেয়ে দেখতে কেমন? উনি কী করেন? নাম কী? পিয়াস বললো মেয়ে আছে একরকম। কিন্তু তোমার মতো এতো স্মার্ট না। মেয়ে পড়াশুনা করছে। তার নাম প্রীতিলতা। কবিতাকে মেয়ের ছবি দেখাইছিলো। তারপরেও তাদের যোগযোগ বন্ধ হয় নি। কবিতা তো ভেবেছিলো পিয়াসের তো বিয়ে ঠিক। হয় তো যোগাযোগ এখানেই শেষ। কিন্তু না। পিয়াস প্রীতিলতার সাথে খুব কম কথা বলত। কবিতার সাথে রোজ কথা হতো।

আর কবিতাকেও বলতো তোমার যতোদিন বিয়ে হয় নি আমি ততদিন বিয়ে করবো না। এই রকম চলতে থাকলো আরো ৩ বছর। কবিতা একসময় তার বাড়ি ছাড়া হলো। এলোমেলো তার জীবন । কবিতা যেখানেই যাক না কেনো পিয়াসের সাথে তার যোগাযোগ বন্ধ হয় নি। কবিতার ভালো হোক পিয়াস সবসময় চাইতো। এক সময় কবিতার মা অসুস্থ হয়ে যান। অথচ, কবিতা তার মায়ের পাশে নেই। কারণ কবিতার মা কোমায় আছেন।

কবিতার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে। মাঝে মাঝে কবিতা তার মাকে দেখতে যায়। পিয়াস সবকিছুই জানে কবিতার এই অবস্থা। কবিতা আর আগের মতো চঞ্চল নেই। সে একদম চুপচাপ হয়ে গেছে। পিয়াস কবিতাকে সময় দিতো।

এরকম চললো কবিতার জীবন। মাঝে মাঝে কবিতা পিয়াসকে বলতো তোমার বিয়ে কবে। পিয়াস বলত করবো। মেয়ে তো ঠিক করাই আছে। করে নেবো একসময়। সে অনেক অসুবিধা দেখাতো। কবিতাকে বলতো আমি চাই তোমার আগে বিয়ে হোক। তারপর আমি বিয়ে করবো। পিয়াস কবিতাকে খুব ভালোবাসত।

সবসময় চাইতো কবিতা যেন ভালো থাকুক। একসময় পিয়াস কাজে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলো। কবিতাকে আগের মতো সময় দিত না। সে জন্য কবিতার খুব অভিমান হতো। ভেতরে ভেতরে খুব কষ্ট পেতো। কিন্তু প্রকাশ করতো না। পিয়াস কবিতার সাথে কথা বললেই বুঝতে পারতো। কবিতা রাগ করে আছে। কেন সে রাগ করেছে? সব বুঝতো। পিয়াস কবিতাকে বলতো আমাকে তো তুমি ভালোবাসো না। সময় দিতে না পারলে কষ্ট পাও কেনো? আমি খুব ব্যস্ত ছিলাম।

কবিতা বলত আমি ঠিক আছি। কবিতা বড্ড অভিমানী। সে পিয়াসকে ভেতরে ভেতরে ভালবেসেছিল। কিন্তু প্রকাশ করে নি। আর করবেও না। কবিতা পিয়াসের বিয়ের কথাটা বার বার মনে করতো। পিয়াস যখন বিয়ে করে নেবে তখন সে কী করে একা থাকবে? কবিতা আবার একা হয়ে যাবে। পিয়াস তার বিয়ের ব্যাপারে কিছু বলতো না। কারণ পিয়াস জানে বিয়ের কথা শুনলে কবিতা কষ্ট পাবে। তখন কবিতা নিজেকে সামলাতে পারবে না। পিয়াস ব্যস্ত থাকলেও কবিতাকে যথেষ্ট সময় দেয়ার চেষ্টা করত। কবিতাকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করতো।

একদিন পিয়াস কবিতাকে বললো সে দেশের বাড়ি যাবে ঈদের ছুটিতে। এবং বাড়িতেই সময় কাটাবে। একসপ্তাহ কোনো যোগাযোগ হবে না। আমি এসে যোগাযোগ করবো।তুমি ভালো থেকো। তবে সুযোগ পেলে বাড়ি থেকে যোগাযোগ করবো। কবিতা বললো ঠিক আছে। কবিতা অপেক্ষা করলো ১ দিন ২ দিন করে ৭ দিন। কিন্তু, কবিতা মাঝখানে একদিন ফোন দিয়েই দিলো। পিয়াস বললো ফোন দিলে যে, আমি দুই দিন পর আসবো এসে যোগাযোগ করবো। কবিতা বললো এতো আওয়াজ কীসের? পিয়াস বললো আমি একটা বিয়েতে আছি। কবিতা বললো কার বিয়ে ? পিয়াস বললো, পাশের গ্রামে। এই বলে কনের একটা ছবি পাঠিয়ে দিলো। কবিতা দেখলো কিন্তু এতোটা গুরুত্ব দিলো না। আরো দুইদিন পর পিয়াস আসলো তার দেশের বাড়ি থেকে।


এসে কবিতার সাথে কথা হলো। ঠিক আগের মতো। পিয়াস কবিতার পাশের বিল্ডিং এ ভাড়া থাকতো। হঠাৎ একদিন কবিতা বললো তোমার বিয়ে কবে? পিয়াস বললো করবো আগামী বছরে। পরে আর বিয়ের ব্যাপারে কথা হয় নি। ইদানিং কবিতা ও পিয়াসের রাগ অভিমান চলতো প্রায়ই। এমনকি ঝগড়াও হতো। পিয়াসের সামান্য কথাতে কবিতা রেগে যেতো। পিয়াস বলতো, এতো অল্প কথায় রাগ করলে চলবে কী করে। জীবনে একাই চলতে হয়। এখন থেকে একা চলতে শিখো। কবিতা পিয়াসের কোনো কথায় রাগ করলে পিয়াসের সাথে কথা বলতো না ২-৩ দিন।

২-৩ পর কথা বলতো। আবার মনে মনে চাইতো সে যেন কবিতার রাগ ভাঙায়। কবিতা সেই অপেক্ষা করতো। পিয়াসও রাগ ভাঙাতো। পরে সব আগের মতো চলতো। এক সময় আসলো কবিতা রাগ করলে সে আর রাগ ভাঙাতে চাইতো না। সে জন্য কবিতা আরো রাগ করতো। পিয়াস সব বুঝত। সে বলত তোমার যখন রাগ মিটবে তুমি এমনিতেই নিজেই কথা বলবে।

কিছুদিন আগে কবিতাকে পিয়াস কথায় কথায় বলছিলো এতো রাগ করা ভালো না। জীবনে অনেক কিছু হারাতে হয়। তাই বলে জীবন থেমে যায় না। কবিতা তো সে কথা শুনে খুব অভিমান করলো ।পিয়াসের বুঝতে কোনো অসুবিধা হয় নি। ২-৩ দিন তাদের কোনো কথা হয় নি। কবিতাকে বললো কী রাগ কমেছে? কবিতা কোনো উত্তর দেয় নি। তারপর পিয়াস বললো তোমার ফোনে একটা ছবি পাঠিয়েছি দেখো। কবিতা মনে মনে ভাবলো, কীসের আবার ছবি? যাই হোক,সে ছবি কবিতা দেখলো। বললো এটা তো আগের ছবি। কিছুই বুঝলো ব্যাপারটা কী?

কবিতা পিয়াসকে বললো এটা দেয়ার কারণ। পিয়াস বললো, ছবিটা একটু ভালো করে দেখ তো, কিছু বুঝ কি না। কবিতা আবার দেখলো অথচ কিছু বুঝলো না। পিয়াস বললো, এটা কিন্তু আগেও দিয়েছি। কবিতা বললো হ্যাঁ, আজ আবার কেন দিলে বুঝলাম না তো? পিয়াস তখন বললো, এখানে একটা নাম আছে দেখ। কবিতা খুব মনোযোগ দিয়ে দেখলো সেই কনের ছবির পেছনে লিখা আছে পিয়াস ও প্রীতিলতার বউ ভাত। দেখেই তো কবিতা অবাক হয়ে গেলো। হয়ে গেলো স্তব্ধ। দু- চোখ থেকে অশ্রু পড়তে লাগলো। তা পিয়াসকে বুঝতে দেয়নি। তবুও কথা বললো পিয়াসের সাথে। কবিতা খুব কাঁদছিলো। পিয়াস তখন বলে উঠলো, আমার এক বছর আগে বিয়ে হয়ে গেছে। কবিতা আমি জানি তুমি খুব কষ্ট পাবে তাই বলিনি।

আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো। কিন্তু কখনো বলোনি। সত্যি সত্যি কবিতা এক সময় পিয়াসকে ভালোবেসেছিলো। সে কথা কবিতা প্রকাশ করে নি। কখনো যে প্রকাশ করবে ও না তাও পিয়াস খুব ভালো করে জানে। পিয়াস তখন বললো, কবিতা আমি সব সময় চেয়েছিলাম তুমি ভালো থাকো। হাসিখুশি থাকো।

আমি তোমাকে সময় দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই সময় এখন শেষ হয়ে এলো। আর কখনো সময় দিতে পারবো না। কারণ আমি আজ প্রীতিলতাকে আনতে যাচ্ছি গ্রামের বাড়িতে। আমরা এখন থেকে এক সাথে থাকবো। তোমার সাথে আর কখনো কথা হবে না। প্রীতিলতাকে যদি না আনতাম, তোমাকে অশ্যই সময় দিতাম। কবিতা আর কিছুই বললো না।

তার কিছু বলার ছিলো না। কবিতা তখন বলেছিলো, আমি না বুঝে তোমাকে অনেক কিছু বলেছি আমাকে ক্ষমা করে দিও। কবিতা এখন বুঝতে পারছে পিয়াস কেন সেদিন সেই কথাগুলি বলেছিলো? এতো রাগ ভালো না। এখন থেকে একা থাকতে শিখো। কবিতা একবারের জন্যও ভাবে নি সেই কনের ছবিটা পিয়াসের স্ত্রী। কবিতা আবার সেই একা হয়ে গেলো। একদম একা। আর ভেতরটা শুধু কান্নায় জর্জরিত। অথচ, কাঁদতে পারছেনা। চাপা কষ্টে বেঁচে আছে। ভেতরটা যেন হাহাকারে ভরে আছে। এতো শুন্যতায় ভরে আছে কবিতার হৃদয়খানি।

সেই হৃদয়ের কান্না কেউ দেখার নেই। কবিতার জীবন কোথায় গিয়ে থামবে কে জানে? কবিতা পৃথিবীতে বেঁচে আছে হাজার যন্ত্রণা নিয়ে। বাবা নেই, মা কোমায়। এখন তো পিয়াসও রইলো না। কবিতার স্বপ্ন ছিলো সে চাকুরী করবে। নিজের পায়ে দাঁড়াবে। অথচ, সেই চাকুরীও হলো না। কারণ কবিতার সেই বয়স পার হয়ে গেছে। কবিতা বেঁচে আছে একমাত্র তার মায়ের জন্য। পড়ে আছে পৃথিবীর এক কোণায়।

লেখক: কবি, ছড়াকার, গল্পকার ও সাহিত্যিক।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-১১