অবশেষে করোনার টিকা গ্রহণে ভোগান্তির অবসান হচ্ছে ওসমানীনগরবাসীর। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র না থাকায় পার্শবর্তী উপজেলা বালাগঞ্জ গিয়ে টিকা গ্রহণ করতে হয়েছে ওসমানীনগর উপজেলাবাসীকে। অবশেষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ওসমানীনগরেই টিকা পাবেন উপজেলার করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধারা।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে তাজপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা গ্রহণের ক্রার্যক্রম শুরু হবে। এর আগে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পর্যায়ে প্রথম ধাপে টিকাদান শুরু হলে ওসমানীনগরবাসীর দুর্ভোগ বিবেচনা করে গত ২৩ মার্চ তাজপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। ৪ মে পর্যন্ত এই উপকেন্দ্রে টিকা প্রদান করা হলেও পরবর্তীতে টিকা সংকটের কারণে এই কেন্দ্রে টিকাদান বন্ধ হয়ে যায়।


জানা গেছে, গত ১১ জুলাই থেকে উপজেলা পর্যায়ে ২য় ধাপে করোনার টিকা প্রদান শুরু হয়। ওসমানীনগরে উপজেলা পর্যায়ে সরকারি হাসপাতাল নির্মাণাধীন থাকায় এ উপজেলার লোকজনকে বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে টিকা নিতে হয়। এতে দূরত্বের কারণে অনেকেই করোনার নমুনা প্রদান বা টিকা গ্রহণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। বর্তমান লকডাউনে সময়মতো পরিবহণ না পাওয়া ও অতিরিক্ত ভাড়ার কারণেও অনেকের মধ্যে টিকা গ্রহণে অনীহা দেখা যাচ্ছে।

ফলে আবারও উপজেলার তাজপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনার নমুনা পরীক্ষা ও টিকা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। প্রতি রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত করোনার নমুনা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) পর্যন্ত ওসমানীনগরে ৯৪৬টি নমুনা পরীক্ষায় ৪০৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ১০ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩১৬ জন আর চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭৯ জন।

বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জুলাই থেকে ২য় ধাপে চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকা প্রদান শুরু হলে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১৩২ জন টিকা গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ওসমানীনগরের ৫৫২ জন ১ম ডোজ টিকা নিয়েছেন। প্রথম ধাপে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মে পর্যন্ত অক্সফোর্ডের টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছিলেন ৬ হাজার ৩৪ জন। এদের মধ্যে আছেন ওসমানীনগরের ৩ হাজার ৭১ জন। ২য় ডোজ গ্রহণ করেছেন মোট ৪ হাজার ৪৯৩ জন। ২য় ডোজ গ্রহণকারীদের মধ্যে ওসমানীনগরের ২ হাজার ৩৯৫ রয়েছেন।

বালাগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ওসমানীনগরে অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. এস এম শাহরিয়ার বলেন, ওসমানীনগরের লোকজনের কষ্টের কথা ভেবে বৃহস্পতিবার থেকে তাজপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সিনোফার্মের টিকা প্রদান শুরু হবে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এই কেন্দ্রের জন্য প্রাথমিকভাবে দেড় হাজার টিকা মজুদ রাখা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, অক্সফোর্ডের তৈরি টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছিলেন, তারা চাইলে এখনই ২য় ডোজ টিকা নিতে পারবেন না। কারণ উপজেলা পর্যায়ে এই টিকা বর্তমানে মজুদ নেই। তবে দুই-একদিনের মধ্যে টিকা আমাদের হাতে এসে পৌঁছার কথা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডিজেএস-৭