সিলেটে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে- এমনটি হয়তো কেউ কোনোদিন ভাবেননি। করোনা আক্রান্ত রোগী নিয়ে স্বজনরা ছুটছেন এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে- কিন্তু মিলছে না নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) বেড। এমনকি সহজে মিলছে না সাধারণ শয্যাও। একজন রোগীর মৃত্যুতেই কেবল খালি হচ্ছে আইসিইউ বেড!

সিলেটে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে আসন সংকট দেখা দিয়েছে তীব্র আকারে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ধারণক্ষমতার তুলনায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বেশি ভোগান্তি হচ্ছে আইসিইউ বেডের দরকার পড়া মুমূর্ষু রোগীদের। সাধারণ শয্যাও সহজলভ্য নয়।


স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে সরকারিভাবে করোনা চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২৪টি আইসিইউ শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। এর বাইরে বেসরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ মিলিয়ে করোনা চিকিৎসায় জেলায় আইসিইউ শয্যা রয়েছে আরও ৮০-৯০টি।

সিলেট নগরীর সরকারি দুই প্রতিষ্ঠান- শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ৮৪টি ও সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২০০টি সাধারণ শয্যা রয়েছে। এর বাইরে বেসরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজগুলোর আইসোলেশন ওয়ার্ডগুলোতে আরও প্রায় ২০০টি সাধারণ শয্যা রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি সিলেটে করোনারোগী আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সংকুলান হচ্ছে না এতসব শয্যায়।

সিলেট শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য সাধাারণ শয্যা আছে ১০০টি। বুধবার (২৮ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত ৯৪ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালের ১৬টি আইসিইউ শয্যাতেই রোগী রয়েছেন। রোগীর অবস্থার উন্নতি না হলে আইসিইউ থেকে স্থানান্তর করা হয় না। এর বাইরে কোনো রোগীর মৃত্যু হলে আইসিইউ শয্যা খালি হয়। অপেক্ষমাণ থাকা রোগীদের গুরুতর অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আইসিইউ শয্যা দেওয়া হয়।

অপরদিকে ওসমানী মেডিকেলের আটটি আইসিইউ শয্যাও রোগীতে পরিপূর্ণ। আর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২০০টি আসনের বিপরীতে ২৩০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত বলেন, জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতার অভাবে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।

গণটিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদানের কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। এই কার্যক্রম সফল হলে এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে চললে সংক্রমণের হার অনেকটা কমবে। তখন হাসপাতালগুলোতে শয্যাসংকট থাকবে না।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে ২৮ তারিখ সকাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনায় মারা গেছেন ১৭৭ জন। আর করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৬৭৩ জন। এক মাসে বিভাগে সর্বোচ্চসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে এটাই রেকর্ড।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম