প্রবাসীসহ বিদেশগামী যাত্রীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা সেটা জানতে বিমানবন্দরে নমুনা পরীক্ষার জন্য র‍্যাপিড পিসিআর মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় এই মেশিন স্থাপন করা হবে। তবে শুরুতেই সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে র‌্যাপিড পিসিআর মেশিন বসানো হচ্ছে না। আপাতত ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই এই মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, কিছু কিছু দেশ বিমানবন্দরে র‌্যাপিড পিসিআর মেশিনে করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করালে তাদের দেশে ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি আরব আমিরাত সরকারের এমন নির্দেশনায় দেশে ছুটিতে আসা প্রায় ২০ হাজার প্রবাসী বিপাকে পড়েন।


এ প্রেক্ষিতে প্রবাসীরা গেল কিছুদিন ধরেই বিমানবন্দরে পিসিআর মেশিন স্থাপনে দাবি জানিয়ে আসছিলেন, বিক্ষোভও করেছেন। এমন অবস্থায় দেশের বিমানবন্দরে র‍্যাপিড পিসিআর মেশিন স্থাপনের জন্য উদ্যোগী হয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ১ সেপ্টেম্বরের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিমানবন্দরে র‌্যাপিড আরটি-পিসিআর টেস্ট মেশিন বসানোর জন্য দুটি কমিটি করে দেওয়া হয়। গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক ছিল। সেখানে বিমানবন্দরে দ্রুত পিসিআর মেশিন স্থাপনে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারিভাবে বিমানবন্দরে পিসিআর মেশিন স্থাপনে সময় বেশি লাগবে। তাই প্রাথমিকভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিমানবন্দরে প্রবাসীসহ বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষার জন্য র‍্যাপিড-পিসিআর ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হবে। এই ল্যাবের পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ল্যাবের কারিগরি অংশের তত্ত্বাবধান করবে।

এ প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা মোটামুটিভাবে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সরকারিভাবে পিসিআর ল্যাব করতে যেহেতু এখন সময় লাগবে সেজন্য আমাদের কাছে যাদের যাদের প্রস্তাব আছে তাদের মধ্য থেকে সিলেকশন করে ল্যাব চালু করার একটা ব্যবস্থা করবো। আমি আশা করছি যে চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে আমরা এই ল্যাব চালু করতে পারবো। একটু লিমিটেড হিসেবে হলেও চালু করতে পারবো।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অবশ্য তিনটা বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু এই সময়ে এই তিনটাতেই একসঙ্গে ল্যাবের প্রয়োজন নেই। তাই শুধুমাত্র ঢাকাতেই ল্যাব হচ্ছে। এটা শুধুমাত্র প্রয়োজন এই মুহূর্তে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানে এখন ফ্লাইট যাচ্ছে শুধুমাত্র ঢাকা থেকে। চট্টগ্রাম বা সিলেট থেকে কোনো ফ্লাইট যাচ্ছে না। তাই সেই দুইটা আমরা পরে দেখবো। আগে ঢাকাটা আমরা চালু করে নেই।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিকভাবে বেসরকারিভাবে একটা ল্যাব করার পরিকল্পনা আছে। এক্ষেত্রে আমরা আগে শুরু করি এরপরে বুঝতে পারবো। এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে প্রায় দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ নমুনা পরীক্ষা করার ডিমান্ড আছে। এক্ষেত্রে আমরা যখন কাজ শুরু করবো তখন বোঝা যাবে। এই পুরো বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ যারা আছে তারা তত্ত্বাবধান করবেন। তবে মূল তত্ত্বাবধান করবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে