কমিটিবিহীন সিলেটে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগে নতুন কমিটির সুর উঠেছিল গত ১৩ মার্চ কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আগমণের মধ্য দিয়ে। নতুন কমিটি করার টার্গেট নিয়েই এদিন সিলেটে এসেছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য।

তাদের আগমণ উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল কর্মীসভার। এ কর্মীসভায় ঢাকায় গিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সিলেটে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু সিলেটে ছাত্রলীগের গ্রুপিং দ্বন্দ্বের কারণে কর্মীসভার ৬ মাস অতিবাহিত হলেও নতুন কমিটি ঘোষণা করতে পারছেন না তারা। প্রথম করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি, পরে রজমান ও ঈদুল ফিতর এবং সর্বশেষ শোকের মাস আগস্টের কারণে কমিটি গঠনের কাজ শুরু হয়নি। তবে আগস্ট মাসের পরও আরো প্রায় দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও কমিটি গঠনের কোন খবর নেই।


জানা গেছে, কর্মীসভা করতে আসার আগেই সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করার চেষ্টা করেছিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তখন সিলেটের ছাত্রলীগ কেন্দ্রীক চারটি গ্রুপের আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা তাদের পছন্দের কর্মীদের দিয়ে ঢাকায় বসেই সিলেটের কমিটি অনুমোদন করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সিলেটের আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে তাঁরা তাতে সায় দেননি। তাই গ্রুপগুলোর অবস্থান যাচাই করতে সিলেটে আসেন তারা। সিলেট সফর করে ঢাকায় গিয়েই কমিটি করার জন্য একাধিক বৈঠক করেন আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য্য। কিন্তু সিলেট আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং গ্রুপিং নেতাদের চাপে আজ পর্যন্ত কমিটি অনুমোদন দিতে পারেন নি তারা।

সর্বশেষ গত ১ সেপ্টেম্বর সিলেট-৩ আসনের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে সিলেটে আসেন জয় ও লেখক। সেদিনও কমিটি করে দেয়ার ব্যপারে নেতাকর্মীদের আশ্বাস দেন তারা।

কিন্তু, একদিকে গ্রুপিং দ্বন্দ্ব, আরেক দিকে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক বানাতে না প্রতিবন্ধকতা আসায় এখনো আটকে গেছে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি।

সুত্র জানিয়েছে, সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের চার শীর্ষপদ পেতে সক্রিয় রয়েছে ৮টি গ্রুপ। এসব গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে স্থানীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, রয়েছেন প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতারাও। এদের মধ্যে কেউ কাউকে ছাড় দেয়ার প্রবণতা না থাকায় এখনও সিলেটে ছাত্রলীগের কমিটি হবে কিনা সেই আশঙ্কা রয়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যে।

তবে কমিটি হওয়া নিয়ে শঙ্কা থাকলেও নেতৃত্বে আসতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের অন্তত অর্ধশত নেতাকর্মী। সিলেটের নেতাদের সিগন্যাল নিয়ে তারা ঢাকায় কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নজর কাড়তে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডিজেএস / ডালিম