আবদুস সামাদ আজাদ একটি নাম, একটি ইতিহাস। ত্রিকালদর্শী রাজনীতিবিদ। ব্রিটিশ আমলে রাজনীতিতে তাঁর হাতেখড়ি। পাকিস্তান আমলে তুখোড় রাজনীতিবিদ। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সাথে সরাসরি জড়িত। আমাদর মহান মুক্তিযুদ্ধে অস্থায়ী মুজিব নগর সরকার গঠন ও বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড ও পরবর্তী রাজনীতি নিয়ে লিখেন 'মুজিব হত্যার রহস্য' বইটি। এখানে তিনি মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজ উদ্দিন আহমদ ও অন্যান্য জাতীয় বীরদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।


এছাড়া বেঈমান মুস্তাক, তাহের ঠাকুর, জিয়া, চাষীদের ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরেন।

বইটিতে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুস সামাদ আজাদ সম্পর্কে বলেন, 'তিনি কখনো প্রচার নিতেন না।'

সুখরঞ্জন দাস গুপ্ত লিখেন, 'মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি লোকের ভূমিকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়, যদিও নিজেকে তিনি সব সময়েই আড়ালেই রাখেন, ইনি সিলেট থেকে নির্বাচিত এমপি আবদুস সামাদ আজাদ। বিদেশি খেল আর দক্ষিণপন্থী কারসাজিতে মুজিবনগরের মধ্যে যখন দলাদলি খেয়ো খেয়ি চলছে তখন এই দেশপ্রেমিক মানুষটি একা মুক্তিযুদ্ধের স্বার্থে সকলকে দলাদলির উর্দ্ধে উঠে কাজ করার ডাক দিয়েছেন, নিরলস কাজ করে গেছেন ঐক্য বজায় রাখতে। একদিকে তিনি মন্ত্রীসভার সকল সদস্যকে ডেকে এনে মুখোমুখি বসিয়েছেন, অপরদিকে মুজাফফর ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাশনাল কংগ্রেস প্রভৃতি যে সব দল ঐক্যের কথা তুলে মন্ত্রীপরিষদে স্থান দাবি করেছিল তাদেরও সামলেছেন। এ ব্যাপারে তিনি ভাসানীর সাহায্য চাইলেন।

তাজউদ্দীন ভয় পাচ্ছিলেন মন্ত্রীসভায় ভিড় বাড়লে দলাদলিও বাড়বে। খেয়ো খেয়ি চলবে ক্ষমতার হিস্যা নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কেউ আর মাথা ঘামাবে না, সর্বনাশ হয়ে যাবে। আবদুস সামাদ আজাদের প্রচেষ্টায়, ভাসানীর হস্তক্ষেপে ওই সংকট থেকে রক্ষা পেলো তাজউদ্দীন সরকার।'


সিলেটভিউ২৪ডটকম/এএআর/এসডি-৪