সিলেট ওসমানী শিশু উদ্যান। ইট-কংক্রিটের শহরজীবনে শিশুসন্তানদের একটু নির্মল আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠার সুযোগ হয় যেখানে। ছোটখাট কয়েকটি ইভেন্ট দিয়ে সাজানো এই শিশু বিনোদনকেন্দ্রটি। হাজারো অসঙ্গতি আর সীমাবদ্ধতার মাঝেও যেখানে মধ্যবিত্ত শ্রেণি খুঁজেন শিশুসন্তানের বিনোদন।

কিন্তু বাস্তবে এ বিনোদন স্থানটি বিদঘুটে হয়ে উঠেছে এখন। ভেতরের অবস্থা সঙ্গীন। বিভিন্ন রাইডার জঙ্গলে ঘেরা। স্থাপনাধীন ‘ওয়াটার স্লাইড’ রাইডারে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা একপুকুর আবর্জনাযুক্ত পানি যেন এডিস মশার প্রজননকেন্দ্র।


এছাড়াও এখানে শিশুর চেয়ে তরুণ-তরুণী আর যুবক-যুবতীদের আনাগোনা বেশী। অবস্থা দৃশ্যে মনে হয়- অবাধ প্রেমকুঞ্জ। ৩০ টাকার টিকিট কেটে সারাদিন প্রেম। উদ্যানের কোণায় কোণায় বিভিন্ন ইভেন্টের আশেপাশে এসব তরুণ-তরুণী ও যুবক-যুবতীদের প্রেমাচার চলে নির্বিঘ্নে। কিছু বলার কেউ নেই এখানে। শিশুদের বিভিন্ন রাইডারও দখল করে বসে থাকে কপোত-কপোতিরা। দায়িত্বরত কর্মচারীরা অতিরিক্তি টাকা পাবার আশায় এ সুযোগ করে দেয়। শিশুদের নিয়ে আসা অভিভাবকরা পড়েন বিপাকে। তরুণ-তরুণীদের অবাঞ্চিত আচরণে কোমলমতি শিশুদের নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন অভিভাবকরা।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওসমানী শিশু উদ্যানের কয়েকটি রাইডার জঙ্গলে ঘেরা। এসব স্থানে বিষধর সাপ-বিচ্ছুর নিরাপদ আবাসস্থল হওয়ারই আশঙ্কা বেশি। অভিভাবকদের সঙ্গে আসা কিছুসংখ্যক শিশু লম্বা লম্বা ঘাস আর জঙ্গলের পাশেই দৌঁড়াদৌঁড়ি-হইহুল্লোড় করছেন। লম্বা ঘাস আর জঙ্গলের ভেতরে বিষধর সাপ-বিচ্ছু থাকলে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।

এছাড়াও উদ্যানে স্থাপনাধীন ‘ওয়াটার স্লাইড’ রাইডারে দীর্ঘদিন ধরে জমে আছে বৃষ্টির পানি। সে পানিতে জমে আছে ময়লা-আবর্জনা।

সিলেট সিটি করপোরেশন বলছে- গাছের গর্ত, কাটা বাঁশের গুঁড়ি, পরিত্যক্ত জায়গা, ভাঙা রাস্তা ও ডোবার স্বচ্ছ পানি ইত্যাদি স্থানে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা বংশ বৃদ্ধি করে। কিন্তু নগরীতে শিশুদের একমাত্র বিনোদনের স্থান ‘বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানে’ দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা পানি এড়িয়ে যাচ্ছে সিসিকের চোখ।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেটভিউ-কে বলেন, সিসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা ডাক্তার জাহিদুল ইসলাম তাঁর টিম নিয়ে বিভিন্ন সময় নগরীর বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি পরীক্ষা করে দেখেন এডিস মশার লার্ভার অস্তিত্ব রয়েছে কি-না। ওসমানী শিশু উদ্যানের ওই জায়গাটি হয়তো নজর এড়িয়ে গেছে। তবে আগামীকালই (রবিবার) সেখানে টিম পাঠিয়ে দ্রুত এ পানি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

উদ্যানটির চেয়ারম্যান ও ব্যবপস্থাপনা পরিচালক মিজান আজিজ চৌধুরী সুইট বর্তমানে অসুস্থ। এ অবস্থায় ওসমানী শিশু উদ্যানের দৈন্যদশার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম