সিলেট বিএনপিতে হঠাৎ শুরু হয়েছে ব্যাপক তোড়জোড়। গত সপ্তাহে ঢাকায় গিয়ে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সিলেট বিএনপির নেতৃবৃন্দ। ওই বৈঠকে সিলেট বিএনপিকে সাজাতে একটি রূপরেখা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এই আলোকে এখন কাজ শুরু করা হবে।

সিলেট জেলা বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছিল ২০১৯ সালের অক্টোবরে। ওই সময় মাত্র তিন মাসের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিকে ভেঙে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। নতুন আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল কামরুল হুদা জায়গীরদারকে। কমিটি গঠনের পর কাজও শুরু করেছিলেন সিলেটের নেতারা।


গত বছরে করোনাকাল শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত জেলার নেতৃবৃন্দ ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি পুনর্গঠনে কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন। গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর ১৮টি ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এরপর করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে কেন্দ্রের নির্দেশে তারা সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। বর্তমানে কেনো বিধিনিষেধ না থাকায় ফের সরব হয়েছেন নেতারা।

বিএনপির দলীয় সূত্র বলছে, করোভাইরাসের কারণে আটকে গিয়েছিল সকল কার্যক্রম। এখন সব কিছু স্বাভাবিক হচ্ছে। এ কারণে সিলেট জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটিকে আর সময় দিতে চান না কেন্দ্রীয় নেতারা। আগামী নভেম্বরে দেয়া হয়েছে সময়সীমা। এই সময়ের মধ্যে সিলেট জেলা বিএনপি’র কাউন্সিল শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঝুলে থাকা ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট সফরে আসেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড জাহিদ হোসেন। তার উপস্থিতিতে গত শনিবার সিলেট জেলা বিএনপির আয়োজন করে বর্ধিত সভার। এ সভায় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ছাড়াও স্থানীয় নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন- ‘আর সময়ক্ষেপণ করা যাবে না। অক্টোবরের মধ্যেই অসমাপ্ত ওয়ার্ডসমূহ, ইউনিয়ন, পৌরশাখা ও উপজেলা বিএনপি’র সম্মেলন শেষ করতে হবে। নভেম্বরের মধ্যেই জেলা বিএনপি’র কাউন্সিল সম্পন্ন করতে হবে।’

এ ছাড়া কাউন্সিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য বেশ কিছু দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন।

সিলেট জেলা বিএনপি’র নেতারা জানিয়েছেন, তারা দলের ভেতরে গণতন্ত্র চান। এজন্য তারা কাউন্সিলের মাধ্যমে সকলের মতামতের ভিত্তিতেই কমিটি গঠন করবেন। স্থানীয় নেতারাই তাদের নেতা নির্বাচন করবেন। এখানে কেউ হস্তক্ষেপ করবে না। এতে করে দলের ভেতরে শক্তি ফিরে আসবে।

বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেছেন- ‘বিএনপি একটি বড় দল। তাই এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে সেটা যেন প্রতিহিংসায় রূপ না নেয় সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি রাখতে হবে। সামনে আমাদেরকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। সেজন্য একটি ঐক্যবদ্ধ সুসংগঠিত তৃণমূল বিএনপি গড়ে তুলতে সবাইকে ভেদাভেদ ভুলে কাজ করতে হবে।’

সিলেট জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার জানিয়েছেন- ‘দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। করোনা মহামারির কারণে আমরা কাঙ্ক্ষিত সময়ের মধ্যে কাউন্সিল সম্পন্ন করতে পারিনি। তবে দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া থেমে থাকেনি। করোনাকালে বিএনপি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এখন সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তিনি জানান- ‘দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়াও দ্রুত এগিয়ে চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা সম্মেলন সফল করবো। এরপর জেলা কাউন্সিল সম্পন্ন করবো।’

এদিকে খুব শিগগিরই মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা জানিয়েছেন, মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাউন্সিলের আয়োজন করা হবে। তার আগে মহানগরেও ঢেলে সাজানো হবে দলকে। ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলন ও কাউন্সিলের আয়োজন করা হবে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম