যত দিন যাচ্ছে ততই মানুষের বাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে এই পৃথিবী। সব কিছু এখন স্বাভাবিক, সুন্দর মনে হলেও এমন দিন আসবে, যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে শ্বাস নেওয়ার মতো বাতাস, অক্সিজেন থাকবে না। আদতে পৃথিবীকে ঘিরে থাকবে না কোনো বায়ুমণ্ডলই। সূর্যের প্রচণ্ড তাপে এবং ক্ষতিকর বিকিরণে ধ্বংস হয়ে যাবে ওজোনস্তর। ফলে অক্সিজেননির্ভর প্রাণের পক্ষে টিকে থাকা যেমন সম্ভব হবে না, তেমনি অসম্ভব হয়ে পড়বে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণও। মানুষ তো বটেই, অল্প কিছু অণুজীব ছাড়া কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদ বাঁচতে পারবে না এই গ্রহে। ২৪০ কোটি বছরেরও আগে পরিস্থিতি যে রকম ছিল পৃথিবী আবার ফিরে যাবে সেই অবস্থায়। পৃথিবী তখন ভরে যাবে অত্যন্ত বিষাক্ত মিথেন গ্যাসে। বিভিন্ন তাত্ত্বিক মডেল খতিয়ে করা সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই অশনিসংকেত দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা নেচার জিওসায়েন্সে। গবেষকরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের ঔজ্জ্বল্যের বাড়া-কমার প্রবণতা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বায়ুমণ্ডলে কিভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ কমে-বাড়ে, সেসবের সব তথ্যও বিশ্লেষণ করেছেন।

ভিনগ্রহে কী প্রকৃতির প্রাণের হদিস মিলতে পারে, সেই প্রাণ বেঁচে থাকে কোন কোন প্রাকৃতিক উপাদানের ওপর নির্ভর করে তা জানার লক্ষ্যে নাসার একটি বিশেষ প্রকল্প ‘নেক্সাস ফর এক্সোপ্লানেট সিস্টেম সায়েন্স’-এর অংশ এই গবেষণা। গবেষণার দুই মূল গবেষক যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ভূবিজ্ঞানী অধ্যাপক ক্রিস রেনহার্ড ও জাপানের তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক কাজুমি ওজাকি জাবি বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতি আসবে সূর্যের তাপে পৃথিবী জ্বলে-পুড়ে খাক হয়ে যাওয়ার আগেই। সেই সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভরে যাবে শুধুই বিষাক্ত মিথেন গ্যাসে, যে গ্যাসে নির্ভর করে বাঁচতে পারে বিশেষ কয়েকটি অণুজীব। তখন মানুষ বা অক্সিজেনের ওপর নির্ভরশীল কোনো প্রাণী বা সালোকসংশ্লেষণনির্ভর কোনো উদ্ভিদই আর টিকে থাকতে পারবে না পৃথিবীতে। ২৪০ কোটি বছরেরও আগে এমনই অবস্থা ছিল পৃথিবীর। এই গ্রহ আবার সেই পরিবেশে ফিরে যাবে। সেটা আর ১০০ থেকে ২০০ কোটি বছরের মধ্যেই হতে পারে।’


গবেষকরা এও জানিয়েছেন, গবেষণার এই ফলাফল বুঝিয়ে দিচ্ছে, মিথেন বা অন্য কোনো গ্যাসনির্ভর প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে ভিনগ্রহের ভিনমুলুকে। এবার সেই ধরনের প্রাণের খোঁজ-তল্লাশের সময় এসে গেছে।

সূত্র : ডিএনএইন্ডিয়া।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/মিআচৌ-০৯


সূত্র : কালের কণ্ঠ