হাওর বাঁচাও আন্দোলন সনামগঞ্জ জেলা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সুনামগঞ্জ শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাঠগারে হাওর অঞ্চলের অন্যতম এই সংগঠনে সুনামগঞ্জ কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।


সকাল ১১ টায় জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক সুকেন্দু সেনের সভাপতিত্বে প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- সুনামগঞ্জ-৪ আসানের সংসদ সদস্য বিরোধী দলীয় হুইফ অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- নারী নেত্রী শীলা রায়, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কুরুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল, ছাতক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান বাবুল প্রমুখ।

সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য সচিব রাজু আহমদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, বাঁধ নির্মাণে পিআইসি একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকরা বাঁধ কোথায় হবে, কারা বাঁধের পিআইসি হবে ঠিক করেন। তাদের পকেটে তালিকা থাকে। তাদের পচন্দে প্রকল্প নিতে হয়, তাদের পচন্দে পিআইসি দিতে হয়। এই ব্যার্থতা আমাদের সকলের। আমি গতবছর আমার এলাকার পরিদর্শনে গিয়ে দেখি একটি স্কুলের নাইটগার্ডকে পিআইসির সভাপতি করা হয়েছে। নাইটগার্ড স্থানীয় এক নেতার ভাই। এইভাবে পিআইসি দিয়ে পিআইসি প্রথাকে বির্তকিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, হাওরে মানুষের সারা বছরের স্বপ্ন লালিত থাকে। এক বছর যদি ফসল হানি হয় মানুষের কষ্টের শেষ থাকে না। সরকার ফসল রক্ষার জন্যে বাঁধ নির্মাণে টাকা দেয়। কিছু লোভী প্রকৃতির মানুষের জন্য বাঁধ নির্মাণ পদ্ধতির প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ২০১৭ সালে হাওর ডুবির প্রতিবাদে সুনামগঞ্জ শহরে প্রথম আমি সমাবেশ করি। পরে শহরের সচেতন নাগরিক হাওর বাঁচাও আন্দোলনের ডাক দেন। হাওরের ফসল ও কৃষকের দাবি আদায়ে এই সংগঠন এখনো একনিষ্টভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

আগামী অর্থ বছরে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকদের সাথে নিয়ে সরেজমিরে বাঁধ পরিদর্শন করে প্রকল্প গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি তাগাদা জানান তিনি।

অধিবেশন শুরুতেই প্রয়াত হাওর আন্দোলন নেতৃবৃন্দের স্মরণের শোক প্রস্তাব পাঠ করেন সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াকুব বখত বাহলুল।

পরে হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়ের সঞ্চালনায় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। এসময় জেলার সকল উপজেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ বক্তব্য রাখেন।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলার ছাতক উপজেলা কমিটির সভাপতি অলিউর রহমান বকুল, শাল্লা উপজেলা কমিটির সভাপতি প্রভাষক তরুণ কান্তি দাশ, সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত দাশ, দিরাই উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামছুল ইসলাম সরদার, তাহিরপুর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হোসাইন শরিফ বিপ্লব, জামালগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি শাহানা আল আজাদ, বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি আব্দল গণি আনছারী, সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি স্বপন কুমার , সাধারণ সম্পাদক শহীদনূর আহমেদ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কমিটির সহ সভাপতি রাধিকা রঞ্জন, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ প্রমুখ।

পরে কাউন্সিলারগণদের সর্বোসম্মতিক্রমে কবি ইয়াকুব বখত বাহলুলকে সভাপতি ও ওবায়দুল হক মিলনকে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করে সুনামগঞ্জ জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করে কাউন্সিল।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/এসএনএ/এসডি-১৫