বিএনপির মহা সচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা এক মর্মান্তিক করুণ যন্ত্রণার মধ্যে বসবাস করছি। আমাদের সন্তানরা ঘরের বাহিরে গেলে ঘরে ফেরৎ আসবে কিনা এ নিয়ে আমরা সঙ্কিত। ৫০০ উপরে নেতাকর্মী গুম হইছে, সহ্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এই সরকার রাজনৈতিকভাবে দেওলিয়া। দেশের সম্পদ লুটকরে দেশের বাহিরে নিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ছে।

৭২ সাল থেকে ক্ষমতায় আসার পর তারাই দেশকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্রের কথা বলে তারা জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তারা সরকার গঠনের আগে বলেছিল ১০ টাকায় চাল, কম দামে তেল, ডাল খাওয়াবে। ঘরে ঘরে চাকরি দিবে। এখন ২৫ লক্ষ টাকার নিচে কোনো চাকরি হয় না। চাকরি পেতে হলে আওয়ামীলীগের সার্টিফিকেট লাগে।


মীর্জা ফজরুল বলেন, করুনায় সাধারণ মানুষকে সহযোগিতার কথা বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লুটপাট করে খেয়েছে। বিদ্যুৎ ও নিত্যপন্যের দাম লাগামহীন। বিচারালয়কে চরমভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা আদালতে জামিন পায় না। এদেশে সাধারণ মানুষ কোনো বিচার পায় না। এটাই বাস্তবতা। সমস্ত রাষ্ট্রকে দলীয়করণ করা হয়েছে। মানুষ পুলিশ দেখলে পালায়। মানুষ এখন বলে মাছের রাজা ইলিশ আর দেশের রাজা পুলিশ। সাংবাদিকদের উপর খরগ নেমে এসেছে। গণমাধ্যমে ঠোঁটি চেপে ধরা হয়েছে। তাদের কোনো স্বাধীনতা নেই। সব সরকার নিয়ন্ত্রণ করে। এই দেশ আওয়ামীলীগ চালায় না। এই দেশ চালায় অদৃশ্য সরকার। অন্ধকার থেকে এই শক্তি কলখাটি নাড়ছে। সরকারের লোকজন প্রতিনিয়ত মিথ্যা কথা বলে। ওবায়দুল কাদের প্রতিদিন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছেন। সরকারের তথ্যমন্ত্রীর মিথ্যাচারে জনগণ তাকে ঠাট্টা করে হাসামাহমুদ বলে।

তিনি বলেন কুমল্লিা, রংপুরসহ দেশে বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় তারা শুধু বিএনপিকে জড়ানো চেষ্টা করেছে। কিন্তু এখন সব কিছু পরিস্কার। পীরগঞ্জের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা সৈকতসহ অন্যান্য স্থানে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সম্পৃক্তা পাওয়া যাচ্ছে। এখন এদেশের হিন্দু ভাইয়েরা সরকারকে বিশ্বাস করে না। হিন্দু ভাইয়েরাও চিল্লাইয়া বলে এসব আওয়ামী লীগ করেছে। রাজনৈতিক হীন স্বার্থে যুগ যুগ ধরে গড়ে উঠা ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করা হচ্ছে। ইকবালকে গ্রেফতার করে নাটক করা হচ্ছে। এসব নাটক মিথ্যাচার দেশের মানুষ জেনেগেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শেষ হয়েগেছে। তাদের এখন যাবার পেলা। এই পেসিবাদী সরকারকে জনতার আদালতে দাঁড় করানো হবে। খালেদা জিয়া কম্পোমাইজ করতে জানেন না। জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে এদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধা করা হবে। তাই দলের সকল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান করেন তিনি।

রবিবার সুনামগঞ্জে শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক হুইফ অ্যাডভোকেট ফজলুল হক আসফিয়ার শোক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক নুরুলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুর মোক্তাদির, ডাক্তার এনামুল হক, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হোসেন জীবন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন, কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেন, আসপিয়াপুত্র ব্যারিস্টার আবিদুল হকসহ জেলা বিএনপি,যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, মহিলাদল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বক্তব্য রাখেন।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/এসএনএ/এসডি-৪২