আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় মনোয়ন বোর্ড কর্তৃক নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা হেভেন হত্যা মামলার প্রধান আসামী হাবিবুর রহমান হাবিবকে মনোনয়ন দেয়ায় বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ।

নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে বুধবার সন্ধ্যায় শহরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।


মানববন্ধনটি এক পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশে রূপ নেয়। পরে শহরে হাবিবের মনোনয়ন বাতিলের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

স্থানীয় নতুন বাজার মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাপদক মাহবুবুর রহমান রাজু।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু ছালেহ জীবন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, ছাত্রলীগ নেতা আবিদ হাসান তালুকদার, মিজান খান প্রমূখ।

উক্ত সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতা হেভেন চৌধুরীকে নির্মমভাবে হত্যা করে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান পৌর যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবসহ কতিপয় সন্ত্রাসী। উক্ত হেভেন হত্যা মামলার প্রধান আসামী হাবিবুর রহমান হাবিবকে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তারা অনতিবিলম্বে হাবিবুর রহমান হাবিবের মনোনয়ন বাতিলের দাবী জানান।

বক্তারা বলেন, ছাত্রলীগ নেতা হেভেন হত্যাকারীর মনোনয়ন বাতিল পুর্বক খুনিদের ফাঁসি দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিকট দাবী জানান। অন্যতায় দুর্বার আন্দোলনের ডাক দেয়ায় হুমকী দেন উপজেলা ছাত্রলীগ।

বিক্ষোভ সমাবেশের খবর পেয়ে একাত্মতা পোষণ করতে মানববন্ধনে যোগ দেন নিহত ছাত্রলীগ নেতা হেভেন চৌধুরীর দাদা সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী, নুরুজ্জামান, সাবেক ইউপি সদস্য মুরুব্বী মো. চুনু মিয়া।

এ সময় কান্না বিজরিত কন্ঠে হেভেনের দাদা সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা হেভেন চৌধুরী নির্মমভাবে হত্যা করে হাবিবসহ সন্ত্রাসীরা। ওই খুনি হাবিবকে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ায় হেভেন হত্যা মামলার বিচার কার্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট খুনি হাবিবের মনোনয়নপত্র বাতিলসহ তার দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবী জানান।

এদিকে পৌর যুগ্ম আহ্বায়ক নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের নৌকার মনোনয়ন প্রাপ্ত হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বি-বাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামের ২০ লাখ টাকা প্রতারণা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে।

মামলার বাদী সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় পরোয়াান থাকার পরও ক্ষমতার দাফটে তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। এরই মাঝে আমরা জানতে পেরেছি সে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক বরাদ্ধ পেয়েছে। এই খবর আমাকে হতবাক করেছে। একজন পরোয়ানাভুক্ত আসামী যদি মনোনয়ন পায় এবং প্রকাশ্যে নির্বাচন করে তাহলে সাধারন মানুষ কোথায় বিচার পাবে? আমি শুনেছি হাবিবের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতা হেভেন হত্যা মামলাসহ আরও প্রতারণার মামলা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

নিহত ছাত্রলীগ নেতা হেভেন চৌধুরীর পিতা মকবুল হোসেন চৌধুরী বলেন, হেভেন চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল। তার জনপ্রিয়তা দেখে সন্ত্রাসী হাবিবসহ একদল সন্ত্রাসী আমার ছেলে নিমর্মভাবে হত্যা করে। যেখানে হত্যাকারীদেও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে দলীয় প্রধানের নির্দেশনা থাকার কথা ছিল, সেখানে হত্যা মামলার প্রধান আসামী হাবিবকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। যা অত্যান্ত দুঃখজনক।

তিনি এ বিষয়ে জাতীর জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/এসবিডি/এসডি-৩৩