ভারতের তামিলনাড়ুতে একটি সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে দেশটির প্রতিরক্ষাপ্রধান বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রীসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, বিধ্বস্ত হয়ে আগুন লাগার আগে হেলিকপ্টারটি একটি গাছে আঘাত করেছিল।

রাশিয়ায় তৈরি এমআই-১৭ভি৫ মডেলের হেলিকপ্টারটি তামিলনাড়ুর কেটারি পার্কের নাজজাপ্পান সাথিরাম এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে ভারতের দৈনিক হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্তের সময় সেখানকার বাসিন্দারা প্রাথমিকভাবে যা দেখেছিলেন, তা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।


বিকট শব্দে হেলিকপ্টারটি যখন বিধ্বস্ত হয়, তখন নিজের বাড়িতে ছিলেন স্থানীয় এক বাসিন্দা পি কৃষ্ণস্বামী। তিনি বলেন, ‘আমি দৌড়ে গিয়ে দেখি, হেলিকপ্টারটি নিচের উপত্যকা থেকে খাড়াভাবে উঠে যাওয়ার আগে একটি গাছে ধাক্কা খেয়ে বিধ্বস্ত হয়।’

কৃষ্ণস্বামী আরও বলেন, আগুন ধরে যাওয়া ওই হেলিকপ্টারটি থেকে মানুষজনকে বের হয়ে আসতে ও সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে দেখেন তিনি। আগুন অনেক বড় হওয়ায় তখন কেউ ধ্বংসাবশেষের কাছে যেতে পারেননি বলে জানান কৃষ্ণস্বামী।

হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় ওই গ্রামে অল্প যে কয়েকজন মানুষ ছিলেন, তাঁদের একজন হলেন পি চন্দ্রকুমার। তিনি বলেন, প্রথমে তিনি মনে করেছিলেন, হয়তো একটি এলপিজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে। একইভাবে এতে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে, তারও অনুমান করেছিলেন। তিনি বলেন, সাধারণত হেলিকপ্টারগুলো লোকালয়ের ওপর দিয়ে ডিফেন্স সার্ভিস কলেজে যায়। কিন্তু দুর্ঘটনার সময় এলাকাটি ছিল মেঘে ঢাকা।

অপর এক বাসিন্দা বলেন, অল্পের জন্য হেলিকপ্টারটি পাশের একটি বাড়ি বা লোকালয়ে বিধ্বস্ত হয়নি। বাড়িঘরে বিধ্বস্ত হলে মৃতের সংখ্যা অনেক বেড়ে যেত।

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর পুলিশ ও অগ্নিনির্বাপণ বিভাগকে ফোন করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা কাছে যেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক পান, সেখানে ছুটে যান।

হেলিকপ্টারটিতে মোট ১৪ জন আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে পাঁচজন ক্রু ও নয়জন যাত্রী। যাত্রীদের মধ্যে বিপিন রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী মাধুলিকা রাওয়াত ছাড়াও ছিলেন সেনা সদস্যরা। বুধবার বেলা ২টার দিকে ভারতীয় বিমানবাহিনী ওই দুর্ঘটনা ও এর কয়েক ঘণ্টা পর বিপিন রাওয়াতসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে