ধানের উপজেলা জামালগঞ্জে দিন দিন বাড়ছে নানান ধরনের সবজির আবাদ। বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি সবজি চাষে কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। তাই ধানের পাশাপাশি বাড়ির আশেপাশে পতিত জমিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন চাষীরা। এবার জামালগঞ্জে ব্যাপক হারে বেড়েছে চাল কুমড়ার চাষ। উপজেলার প্রতিটি গ্রামের উঁচু জমিতে মাঠ জুড়ে মাচায় মাচায় দুলছে চাল কুমড়া।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা মোট আবাদী জমির পরিমান ২৭ হাজার ৯৩ হেক্টর। এর মধ্যে চাল কুমড়া সহ সবজি চাষ হয়েছে ১৪৫ হেক্টর জমিতে। এবছর সবজি চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ১৩৫ হেক্টর জমি। সবজি লাভজনক হওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষমাত্রার চেয়ে ১০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ বেশী করা হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকেই বাজারে চাহিদা থাকায় স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে জামালগঞ্জের উৎপাদিত চাল কুমড়া সহ বিভিন্ন সবজি। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবং রোগ বালাইয়ের আক্রমন কম থাকায় বাম্পার ফলনে সবজি চাষিরা খুশি।


উপজেলার জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সংবাদপুর গ্রামের চালকুমড়া চাষী জাফর আলী জানান, আমি এবছর দেড় বিঘা জমিতে চাল কুমড়া চাষ করেছি। চাষ, সার, ঔষধ, বাঁশ, নেট জাল ও কামলা সহ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি প্রতি সপ্তাহে ৪শত’ থেকে ৫শত’ পিস কুমড়া পাই। পাইকারী দরে প্রতিটি কুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকায় জমি থেকে ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যায়। পাইকারকে ফোন দিলে তারা এসে নিয়ে যায়, এতে কোন ঝামেলা নেই। আসলের দ্বিগুণ বিক্রি হয়েছে। আরো মাস দেড়মাস বিক্রি করা যাবে। আশা করি যে টাকা খরচ হয়েছে তার চেয়ে চারগুণ লাভ হবে।

অপরদিকে চাল কুমড়ার চাষী মো. ইয়ার আলী বলেন, গতবছর যে জমিতে ধান করেছিলাম এ বছর এই জমিতে চাল কুমড়া চাষ করেছি। ধান করে জমিতে ১৬ হাজার টাকা খরচ করে ১৮ হাজার টাকার ধান পেয়েছি। এবার এই জমিতে ২৫ হাজার টাকা খরচ করে চাল কুমড়া চাষ করে ৮০ হাজার টাকার মতো বিক্রি করেছি। আরো ২০—২৫ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো। অন্য ফসলের চেয়ে লাভের পরিমান চাল কুমড়া চাষে বেশী হওয়ায় আগামীতে আরো বেশী জমিতে কুমড়ার চাষ করবো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলা উদ্দিন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসে সার্বিক সহযোগীতায় সবজি চাষে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে সবজি চাষে খরচের তিন চারগুণ লাভ হওয়ায় এই চাষে আগ্রহী হচ্ছে চাষীরা। আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ চাষীদের সঠিক পরামর্শ সহ সব ধরনের সহযোগীতা করে আসছেন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ মাহি