আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণার দৌড়ঝাপ। দিনভর প্রখর রোদে ঘামে শরীর ভিজিয়ে ভোটদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন তারা। যদিও এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় রয়েছে ইসির বিধিনিষেধ। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির  নজরুল ইসলাম বাবুলকে শোকজ নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু না হলেও প্রতিনিয়তই নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি দিতে প্রতিযোগিতা চলছে প্রার্থীদের মধ্যে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণার নির্বাচনী মাঠ দখলের চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান।


এছাড়াও অন্য ৪ প্রার্থী; জাকের পার্টির গোলাপফুল প্রতীকের মো. জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল হানিফ টুকু, সালাহ উদ্দীন রিমন, মো. শাহ জাহান মিয়া প্রচারণা সরবভাবে এখনও দেখা যায়নি। 

আজ বুধবার (৩১ মে) সকালে নগরীর মেন্দিবাগ এলাকায় প্রচারণা করেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এ সময় তিনি স্মাট সিলেট সিটি গড়তে ২১ জুন নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। 

তিনি বলেন, এবারে সিলেট সিটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তিনি স্বাভাবিকভাবেই বিপুল ভোটে জয়ী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি নির্বাচিত হলে বিগত কয়েক বছরে সিলেটে যে উন্নয়ন হয়নি, তার চেয়ে বেশি উন্নয়ন করে দেখাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।  

এদিকে ইসির শোকজ পেয়ে গণসংযোগ থেকে বিরত থেকেছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। তাঁর ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে- প্রতীক পেয়েই প্রচারে নামবেন তিনি। তবে আর আগে বিভিন্ন জায়গায় প্রচারণায় তিনি মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে নগরের প্রত্যেকটি সমস্যা চিহ্নিত করে ধারাবাহিকভাবে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করবেন  বলে জানিয়েছেন।

তবে এরআগে নগরীর সোবহানীঘাট এলাকায় প্রচারকালে নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘অতীতের যে সকল মেয়র এসেছেন, তারা লোক দেখানোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন। বাস্তবিক অর্থে নগরবাসীর জীবনমানের কোনো উন্নয়নই হয়নি। সিটি কর্পোরেশন থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না সাধারণ জনগণ। নগরবাসী আজ ত্যক্তবিরক্ত। তারা পরিবর্তন চান। সিলেটের আবালবৃদ্ধবনিতার প্রথম পছন্দ লাঙ্গল মার্কা।’

আর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান প্রকৃত স্মার্ট নগর গড়তে সর্বপ্রথম নগরভবনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে বলে ঘোষনা দিয়েছেন।

গত ৩০ মে শাহী ঈদগা কার ও মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড এর কার্যালয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান।

এসময় তিনি বলেন, আমি যদি আপনাদের সহযোগিতায় নির্বাচিত হতে পারি তাহলে সিলেট শহরকে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন শহর হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ। সিলেটের সর্বস্তরের বিশিষ্টজনদের নিয়ে কমিটি করে সবার মতামত নিয়ে সিলেট শহরকে সাজানোর কাজ করব। পরামর্শ করে ম্যাপ করে সিলেটে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়ে সিলেটকে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন শহরে রুপান্তরিত করা হবে ইনশাল্লাহ।

নির্বাচনে তফসিল অনুযায়ী ২৩ মে ছিলো মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই ২৫ মে ও ১ জুনের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। সিলেট সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মহানগরীর ওয়ার্ড ৪২টি। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজরা ভোটর রয়েছেন ৬ জন। মোট কেন্দ্র ১৯০টি যেখানে স্থায়ী ও অস্থায়ী ভোটকক্ষ থাকবে ১হাজার ৪৬২টি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/কেআই-এম