ভারতের ওড়িশায় শুক্রবার রাতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে ভুল সিগন্যালের কারণে। রেলমন্ত্রী অশীনি বৈষ্ণ রোববার (৪ জুন) জানিয়েছেন, সেখানে থাকা ইলেকট্রনিক সিগন্যালের ত্রুটির কারণে প্রায় ৩০০ মানুষের প্রাণ গেছে।


এছাড়া প্রাথমিক তদন্তেও বের হয়েছে শুধুমাত্র সিগন্যালের ভুলের কারণে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে।



বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ওড়িশার বালেশ্বরের যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে চারটি লাইন ছিল। যেগুলোর মধ্যে দুটি মেইন লাইন। আর বাকি দুটি লুপ লাইন।

১২৭ কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে আসা সালিমার-চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের মেইন লাইন দিয়ে চলে যাওয়ার কথা ছিল। এজন্য মেইন লাইনে সিগন্যালও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সিগন্যাল আবার বন্ধ করে পাশের লুপ লাইনে দেওয়া হয়। ওই সময় লুপ লাইনে দাঁড়ানো মালবাহী ট্রেনকে পেছন থেকে প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা মারে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এতে ট্রেনটির বেশিরভাগ বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এর কয়েক মিনিট পরই ব্যাঙ্গালুরু থেকে আসা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস করমণ্ডলের বগিগুলোতে ধাক্কা মারে।
 

দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন বলেছেন, ‘এটি পয়েন্ট মেশিন, ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং। যে পরিবর্তন ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিংয়ের সময় হয়েছিল, এ কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কে সিগন্যাল দিয়ে আবার বন্ধ করে দিয়েছে এবং এটির পেছনের কারণ কী সেটি তদন্তের পর বেরিয়ে আসবে।’


তিনি আরও বলেছেন, ‘ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার আসল কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। আমি বিস্তারিততে যাব না। তদন্ত প্রতিবেদন আসুক। আমি শুধু বলব আসল কারণ এবং কারা দায়ী সেটি চিহ্নিত হয়েছে।’


রেললাইনের  ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিংয়ের পয়েন্ট মেশিন। এই মেশিনেই ত্রুটির কারণে ভারতে ঝরেছে প্রায় ৩০০ মানুষের প্রাণ
এদিকে শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনা ঘটার পর আহত ও নিহতদের উদ্ধারে ১৮ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চলে। এখন রেললাইন পরিষ্কার ও ক্ষতিগ্রস্ত বগিগুলো সরানোর কাজ চলছে।
 

তিন ট্রেনের সংঘর্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ২৭৫ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে ভারত। যদিও একবার বলা হয়েছিল, এ ঘটনায় ২৮৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে মৃতদেহ পুনর্গণনা শেষে সংখ্যাটি কমানো হয়।
 

ভারতের নয়াদিল্লিতে ১৯৯৫ সালে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩৫৮ জন নিহত হন। যা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রেল দুর্ঘটনা। এছাড় ২০১৬ সালে ইন্দোর ও পাটনা শহরের মাঝামাঝি একটি জায়গায় রেন লাইনচ্যুত হয়ে ১৪৬ জন মারা যান।
 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এনটি


সূত্র : ঢাকা পোস্ট