মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মধ্যযুগীয় কায়দায় দেবরের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সুরমা বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধূ। তিনি উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের দোয়াল গ্রামের বাসিন্দা। ভয়াবহ নির্যাতনের দাগ এখনও তার শরীরে স্পষ্ট রয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে বুধবার (৭ মে) সকালে ভয়াবহ এ নির্যাতনের ঘটনা এই প্রতিবেদককে জানান সুরমা বেগম।


তিনি জানান, তার দেবর লতিফ মিয়া (২৮) প্রায়‌ই বাড়িতে সকলের সাথে অসদাচরণ করে থাকে। গত ২৯ মে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায় লতিফ। মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতনের শিকারের চিহ্ন তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। স্বামী জহির আলী বাইরে কাজে থাকা অবস্থায় এ হামলার স্বীকার হন তিনি। হামলার সময় লতিফ তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচণ্ড জোরে কিল-ঘুষি দিলে একটি দাঁতও ভেঙে যায়।

তিনি আরও জানান, ভয়াবহ এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দেবরের হাতে-পায়ে ধরে প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও অমানুষিক নির্যাতন চালায় লতিফ। নির্যাতনের একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ঘটনাস্থল থেকে লতিফ মিয়া পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

সুরমা বেগম বলেন, তার ১২ বছরের এক শিশুসন্তান এমন ভয়াবহ নির্যাতন দেখে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আতঙ্কিত ওই শিশুর চোখমুখে এখনও ভয়ের ছাপ রয়েছে।

অমানুষিক নির্যাতনের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা এখনও তাকে এখনও আতঙ্কিত করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ভয়াবহ এই নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার চাই।'
এ বিষয়ে সুরমা বেগমের দেবর লতিফ মিয়ার বক্তব্যের জন্য একাধিকারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সুরমা বেগমের স্বামী জহির আলী বলেন, আমার স্ত্রীর উপর এই ভয়াবহ হামলার উচিত বিচার চাই। এতো অমানবিক নির্যাতনের যন্ত্রণা দেখে আমি সহ্য করতে পারছি না।

কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ বলেন, বিষয়টি জেনেছি। অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় আনা হবে। নির্যাতিতা মহিলাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুছ ছালেক বলেন, নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / অনি / ডি.আর