হবিগঞ্জ পৌরএলাকায় গড়ে ওঠছে একের পর এক অনুমোদনহীন ভবন। সেই সাথে যারা অনুমোদন নিয়েছেন তারাও মানছেন না বিল্ডিং কোড আইন। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে একদিকে যেমন গড়ে ওঠছে অনিরাপদ আবাসন, তেমনি নানা ধরণে ভোগান্তি বাড়ছে নাগরিকের। সচেতন মহল বলছেন, এ সমস্যার জন্য দায় নিতে হবে পৌরসভাকে। আর পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে- এরই মধ্যে অনুমোদনহীন এবং নকশাবহির্ভূত ভবনের তালিকা তৈরীর কাজ চলছে।

জানা গেছে, নিয়ম অনুয়ায়ি পৌরসভার ভেতরে ভবন নির্মাণের জন্য নিতে হয় পৌরসভার অনুমোদন ও নকশা। কিন্তু নিজেদের সুবিধা মতো ভবন নির্মাণ করার স্বার্থে অনেকেই নিচ্ছেন না অনুমোদন। আবার যারা অনুমোদন নিচ্ছেন তারাও মানছেন না বিল্ডিং কোড আইন। বিল্ডিং কোড অনুযায়ি ইমারতের চারপাশে নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা, পয়ঃনিষ্কাশন-ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও রাস্তা থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ ভবন নির্মাণেরই এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। ফলে এসব সমস্যায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এছাড়াও বৃষ্টি মৌসুমে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতার।


সরেজমিনে শহরের অধিকাংশ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ পাড়া-মহল্লার রাস্তা এতটাই সরু যে এ্যাম্বুলেন্স-ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাওয়াতো দূরের কথা, ঠিকমতো রিকশাও যেতে পারে না। গেল এক দশকে শহরে পুকুর-জলাশয় ভরাট করে গড়ে ওঠেছে শত-শত ইমারত বাসা বাড়ি। বেদখল হচ্ছে নদীর জায়গা। ফলে অপরিকল্পিত নগরায়নের জন্য পৌরসভার গাফিলতিই বেশি দায়ি। যদিও পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, নিরবে নিভৃতে অনেকে অনুমোদন না নিয়েই ভবন নির্মাণ করছে। যার সিংহভাগই প্রভাবশালী হওয়ায় পৌরসভার পাশ কাটিয়ে অনেকটা গায়ের জোরেই গড়ে তোলছেন এসব ইমারত।

স্থানীয় বাসিন্দা ইকবাল আহমেদ বলেন, পৌর এলাকায় বাসা বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ মানুষই আনুমোদন নিচ্ছে না মানছে না কোন নীয়মনীতি। যে কারণে দিন দিন ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠছে হবিগঞ্জ শহর। এছাড়াও ভূমিকম্প ঝুঁকি তো রয়েছেই।

হবিগঞ্জ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর টিপু আহমেদ জানান, একটি প্রভাবশালী শ্রেণী নিজেরদের মতো করে পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না নিয়েই বাসা বাড়ি নির্মাণ করছে। তবে এ বিষয়ে এখন তালিকা তৈরীর কাজ করছে।

হবিগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী দিলিপ দাশ জানান, বাসা বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। বিল্ডিং কোড অনুযায়ি ইমারতের চারপাশে নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা, পয়ঃনিষ্কাশন-ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও রাস্তা থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না।

হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমানর সেলিম বলেন, এরই মধ্যে অনুমোদনহীন এবং নকশাবহির্ভূত ভবনের তালিকা তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে। তালিকা তৈরী সম্পন্ন হলেই ইমারত নির্মাণ আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/জাকারিয়া/মাহি