ল্যুভর মিউজিয়াম যাকে ফরাসি ভাষায় ‘মুজে দ্যু ল্যুভখঁ’ বলা হয়। মিউজিয়ামটি দুনিয়ার সব চেয়ে বড় জাদুঘর এখন।এই মিউজিয়ামে দুবার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু কোন বারই পুরোপুরি দেখে আসতে পারিনি।
 

গতকাল মাত্র তিনটি বিভাগ দেখেছি। কারণ এই মিউজিয়ামের ব্যাপ্তি এতো বড় যা ১৪ কিলোমিটার। এখানে সংরক্ষণ করা আছে বৈজ্ঞানিক, শৈল্পিক, পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন ও ঐতিহাসিক মূল্যবান জিনিসপত্র।বর্তমানে জাদুঘরটিকে আটটি সংগ্রহশালা বিভক্ত করা হয়েছে, যথাক্রমেঃ মিশরীয় পুরাতত্ত্ব; নিকট প্রাচ্য পুরাতত্ত্ব; গ্রিক, এট্রাস্কান ও রোমান পুরাতত্ত্ব; ইসলামিক শিল্পকলা; ভাস্কর্য; সজ্জা সংক্রান্ত শিল্প; অঙ্কন শিল্প এবং ছাপা শিল্প। মিউজিয়ামটিতে ৩৮০০০ হাজারটি প্রাগৈতিহাসিক ও ঐতিহাসিক শিল্পকর্মের সংগ্রহশালা রয়েছে।বছরে প্রায় ৯.৬ মিলিয়ন পর্যটক শুধু মাত্র এই মিউজিয়ামটি ভিজিট করে থাকেন। এই মিউজিয়ামটিতে যে সংগ্রহশালা রয়েছে তা নিয়ে দুনিয়া জুড়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে অনেকেই বলেন যে, এই গুলো ফরাসিরা সারা দুনিয়া থেকে চুরি করে নিয়ে আসছে। বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে আমরা সবাই এই বিষয় নিয়ে বেশ সরব। আমি নিজেও বলতাম। বিষয়টিতে আইনের ছাত্র হিসেবে একটু ক্রিটিক্যাল তিলকিত করতে চেস্টা করলাম।
 


বিষয়টি বুঝার জন্য গতকাল  আমি আমার গ্রুপের সাথে না থেকে একা একা  ঘুরে ঘুরে প্রত্যকটি ‘আইটেমের ডেস্ক্রিপসন’ পড়লাম। সেখানে কি লেখা? যা দেখতে পেলাম এই আইটেম গুলোর ডেস্ক্রিপসনে যে, এই গুলো মালিকানা কার ছিল এবং ফরাসিরা কিভাবে পেল কার কার হাত হয়ে তাদেঁর কাছে এসেছে?। তাদের  বক্তব্য  জানতে চেস্টা করলাম।যা দেখতে পেলাম যে এই গুলো বিভিন্ন জাতি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করেছে। একই ভাবে ফরাসিরা হয় যুদ্ধ করে পেয়েছে অথবা কোন দেশ বা রাজা তাদেঁরকে উপহার দিয়েছে। এই ভাবে তারা তার মালিক হয়েছে। এখন বিষয়টি বুঝার জন্য উল্টো প্রশ্ন করলাম যে কেউ যদি যুদ্ধে জিতে তাহলে ঐ জাতির মূল্যবান জিনিস পত্র নিতে পারে কি না? ।আইনের আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা পেলাম, জেনেভা কনভেনশন ১৯৪৯, ইউনিভার্সাল ডিকলারেশন অফ হিউম্যান রাইটস বা ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইটস চার্টার প্রনয়নের আগে পৃথিবীতে তেমন কোন কোডিফাইড যুদ্ধ আইন ছিল না। তখন বিভিন্ন কাস্টমস এন্ড ট্যাডিশনাল প্র্যাকটিস ছিল এবং যুদ্ধে যে জিতবে সে  ঐ পরাজিত জাতিকে দখল, দাস মানানো, সোনা-দানা মূল্যবান জিনিস পত্র নিতে পারতো এমনকি  তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারতো। সে হিসেবে বিচার করলে ফরাসি জাতি তা চুরি করে নিয়ে আসে নি। তাছাড়া আমি/আপনি যদি ইসলামিক যুদ্ধ আইন দেখি তাহলে দেখতে পাই ‘গনিমতের মাল- যুদ্ধে অর্জিত সম্পদ’ ভাগ করে নেওয়া জায়েজ( অনুমোদন) ছিল ও এখনো আছে।এমনকি যুদ্ধ বন্দিদের দাস/দাসি বানানোর অনুমোদন আছে। জানিনা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের এই এনালাইসিস সটিক-বেটিক হতে পারে।ভিন্ন মতকে সব সময় স্বাগতম জানাই।

 


লেখক: কাওসার আহমেদ, ছাত্র (ব্রিটিশ ‘ল’) ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন।