হেড ফিড কম্বাইন হারভেস্টার। এটি ডিজেল ইঞ্জিনচালিত এমন একটি যন্ত্র, যা দিয়ে শস্য সংগ্রহের প্রধান চারটি কাজ (কর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী) একই সঙ্গে করা যায় ফলে যন্ত্রটির নাম কম্বাইন হারভেস্টার বলা হয়ে থাকে।
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের লক্ষ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের মধ্যে সরবরাহের লক্ষ্যে বর্তমানে এই কৃষিযন্ত্রটি চায়না, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। তবে এই যন্ত্র এবার দেশে তৈরির স্বপ্ন দেখালো আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড । এই যন্ত্রটি তৈরির চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার ও শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার প্রাপ্ত স্বনামধন্য কৃষি যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের লক্ষ্যে খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ (এসএফএমআরএ) প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ব্রি) এর তত্ত্বাবধানে আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানায় তৈরি করা হয়েছে হেড ফিড কম্বাইন হারভেস্টার নামক বৃহৎ কৃষিযন্ত্র।
তাদের নিজস্ব কারখানায় এই মুল্যবান কৃষিযন্ত্র তৈরির মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষি যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক শিল্প সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আরেকধাপ এগিয়ে গেল। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট অর্জন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ।
তৈরিকৃত এই যন্ত্রটি মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)’র কৃষি খামারে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার (৭ আগস্ট) বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ব্রি) ও আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রকৌশলীরা যন্ত্রটির প্রাথমিক পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেন।
প্রচলিত পদ্ধতির পরিবর্তে ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে এই যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তারা তাদের প্রচুর সময়, শ্রম ও অর্থ সাশ্রয় করতে পারবেন। স্থানীয়ভাবে এই যন্ত্রটি ব্যাপকভাবে তৈরি করা সম্ভব হলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে। বর্তমানে এই কৃষিযন্ত্রটি চায়না, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সরকারি প্রকল্পের আওতায় আমদানি করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বৃহৎ এই কৃষিযন্ত্রব্যবহারের মাধ্যমে দেশের কৃষকরা একই সাথে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী করতে সক্ষম হবেন। এটি কাদায়ও চলবে। এমনকি ছোট জমিতেও ব্যবহার করা যাবে। যন্ত্রটি দিয়ে কম সময়ে অধিক জমির ধান-গম কাটা যায় বিধায় অপচয় হ্রাস পাবে এবং সার্বিক উৎপাদন খরচ কম হবে। তাছাড়া সঠিক সময়ে দ্রুত ফসল কেটে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি থেকে শস্য রক্ষা করা গেলে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হবেন এবং কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।
বিএডিসির কৃষি খামারে ফিল্ড টেস্টের সময় উপস্থিত ছিলেন খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ (এসএফএমআরএ) প্রকল্পের পরিচালক ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোশাররফ হোসেন, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আলীমুছ ছাদাত চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীমুল এহছান চৌধুরী, এজিএম-প্রোডাকশন সৈয়দ মনজুর রাশেদ, গবেষণা কর্মকর্তা শ্যামল দেবনাথ, প্রকৌশলী ভাস্কর চক্রবর্তী এবং বিএডিসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক পরিতোষ পাল, উপ-সহকারী পরিচালক জনাব সৌমিত্র দাশ ও অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/পিডি