‘কক্ষে চারটি টেবিল। প্রতিটির পাশে সাজানো ৪টি করে চেয়ার। সেখানে বসে আছেন সম্ভাবনাময় তরুণ কিছু মুখ। কেউ অপলক দৃষ্টিতে পড়ছেন বই। কেউ কানে হেডফোন গুজে ল্যাপটপের পর্দায় বুলাচ্ছেন চোখ। কিছুক্ষণ পর পর দৃষ্টি ফিরিয়ে হাতে থাকা কলম দিয়ে লিখছেন খাতায়। কক্ষটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত। আছে বৈদ্যুতিক বাতি-পাখা। নিরাপত্তার স্বার্থে এক কোণে ঝুলছে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। অন্য কোণে ছোট একটি গ্রন্থাগার। এতে রয়েছে দেশের ইতিহাসসমৃদ্ধ বই।’

 


বলছিলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ মুজতবা আলী হলের ছাত্রদের একটি রিডিং রুমের কথা। শুধু এ হলেই নয়, ছাত্রদের বাকি ২টি হলের (শাহপরাণ হল ও বঙ্গবন্ধুশেখ মুজিবুর রহমান হল) রিডিং রুমে প্রায় একই দৃশ্য; যা এখন নিত্যদিন চোখে পড়ে। কিন্তু গত দুই বছর পূর্বেও এমন চিত্র ছিল কদাচিৎ।


 
হলের আবাসিক ছাত্ররা বলেন, ‘পূর্বে চাকরি প্রত্যাশী সিনিয়র শিক্ষার্থীরা শুধু রিডিংরুমমুখী ছিলেন। প্রথম থেকে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের রিডিং রুমে পড়াশোনার ঝোঁকও তেমন ছিল না। এখন শিক্ষার্থীরা রিডিং রুমমুখী হচ্ছেন। দিন-রাতের অধিকাংশ সময়ে পড়াশোনার উদ্দেশে রিডিং রুমে কাটান তারা। তাই সেগুলো শিক্ষার্থীশূন্য থাকে না বললেই চলে।’


 
হলপ্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ছাত্রদের তিনটি হলে রিডিং রুম রয়েছে ৭টি। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের রিডিং কক্ষগুলোর নামকরণেও ঐতিহ্যের মিশেল রয়েছে। 

 

এ হলের তিনটি রিডিং রুমের নাম রাখা হয়েছে- অমর একুশে, বিজয় একাত্তর ও স্বাধীনতা। শাহপরাণ হলে একটি ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে ৩টি রিডিং রুম রয়েছে। সৈয়দ মুজতবা আলী হলের নিচতলার রিডিং রুমে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের বই রাখা হয়েছে। মূলত নতুন প্রজন্মকে দেশ-জাতির ইতিহাস সম্পর্কে উদ্ভুদ্ধ করাই এসবের উদ্দেশ্য।


 
সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রাধ্যক্ষ আবু সাঈদ আরফিন খান বলেন, ‘ছাত্রদের জন্য পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করাই আমাদের প্রধান কাজ। একটি ধারণা পূর্ব ছিল যে, হলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা হয় না। কিন্তু আমরা চাই শিক্ষার্থীরা হলের সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশ গড়ার জন্য নিজেদেরকে তৈরি করুক। এজন্য হলের উন্নয়ন কাজ অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ তৎপর রয়েছে।’
 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/নোমান/ইআ-০৭