বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে পদোন্নতি পেয়েছেন ৮ জন। এর মধ্যে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত হয়েছে নতুন তিন মুখ। উপদেষ্টাদের সবাই সিলেটের বাসিন্দা। একসাথে তিনজন উপদেষ্টা পেয়ে উজ্জ্বীবিত সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীরা।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য থেকে পদোন্নতি পেয়ে উপদেষ্টা হওয়ায় শনিবার মিষ্টিমুখ করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অনুসারীরা।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ৮ নেতাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালিক। এর মধ্যে আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং এমএ মালিকের গ্রামের বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ও মাহিদুর রহমানের মৌলভীবাজারে। এছাড়াও পদোন্নতি পেয়ে যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম. আহমদ হয়েছেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য। তিনি সুনামগঞ্জের বাসিন্দা। একসাথে চার নেতার পদোন্নতিতে সিলেট বিএনপিতে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে আরিফুল হক চৌধুরী উপদেষ্টা হওয়ায় সিলেট মহানগরীতে তার বলয়ের নেতাকর্মীরা বেশ উচ্ছ্বসিত। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দলীয় নেতাকর্মীরা তার কুমারপাড়াস্থ অফিসে গিয়ে মিষ্টিমুখ করেন। সিটি মেয়রের দায়িত্ব পালনাকালীন সময়ে দলীয় কর্মকান্ডে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় ছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী।
গত সিটি নির্বাচনের আগে তিনি লন্ডন সফর করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে দেখা করে আসেন। দেশে ফিরে ঘোষণা দেন নির্বাচন না করার। জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকা সত্ত্বেও দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় তাকে নিয়ে নেতাকর্মীদের আগ্রহ বেড়ে যায়। এরপর থেকে তিনি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হচ্ছেন এমন গুঞ্জন ছিল। আরিফ কখনো ভাইস চেয়ারম্যান হচ্ছেন, আবার কখনো উপদেষ্টা হচ্ছেন- এমন গুঞ্জন চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদবী পেতে তিনি নিজেও হাইকমান্ডের সাথে লবিং করে আসছিলেন। শেষ পর্যন্ত শনিবার তাকে উপদেষ্টা হিসেবেই পদোন্নতি দেওয়া হয়।
দলীয় সূত্র জানায়, এতোদিন সিলেটের রাজনীতিতে অনেকটা আধিপত্য বিস্তার করে চলছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার মুক্তাদির আহমদ। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটিতে তারই প্রাধান্য ছিল বেশি। কমিটিতে নিজের অনুসারীদের ভাল অবস্থানে জায়গা করে দিতে না পেরে অনেকটা কোনঠাসা ছিলেন আরিফ। এখন আরিফ উপদেষ্টা হওয়ায় মুক্তাদিরের আধিপত্যে টান পড়বে বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা।
এদিকে, নতুন যুক্ত হওয়া বাকি দুই উপদেষ্টার এলাকায়ও নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। কয়ছর এম. আহমদ নির্বাহী সদস্য হওয়ায় সুনামগঞ্জেও তার অনুসারী নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য বেড়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে সিলেটের নেতাদের অংশগ্রহণ বাড়ায় সিলেটে বিএনপির রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
নতুন তিন উপদেষ্টা প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ সিলেটভিউ’কে বলেন, দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আরিফুল হক চৌধুরী ছিলেন। লোভ-লালসার উর্ধ্বে ওঠে দলের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে তিনি গত সিটি নির্বাচনে অংশ নেননি। তার এই ত্যাগ ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি দলে পুরস্কৃত হয়েছেন। এছাড়া সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে বিএনপির ব্যানারে বিশাল শোডাউন হয়েছে। এজন্য প্রবাসী নেতাদেরও মূল্যায়ন করেছে দল।
সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী সিলেটভিউ’কে বলেন, রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রে অংশিদারিত্ব বাড়ায় নিশ্চয় সিলেটে বিএনপির রাজনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ শাদিআচৌ /এসডি-৩৭০