আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিলেট অঞ্চলের চাষিরা। ধানের উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে দাম থাকায় খুশি তারা। তবে বিভাগের বেশ কয়েকটি জায়গায় ধানে পোকার আক্রমণের কথা জানান কৃষকরা। এদিকে, ধান কাটা শেষে আবারও জমি প্রস্তুত করে সেখানে আলু ও সরিষা চাষের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন অনেক কৃষক। ইতোমধ্যে অনেকেই আলু চাষের জন্য জমিতে গোবর সার প্রয়োগ করতেও শুরু করেছেন।
সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বিভাগে ৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ লক্ষ ২৬ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন চাল।
এর মধ্যে সিলেট জেলায় চাষ হয়েছে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৭১ মেট্রিক টন চাল। সুনামগঞ্জ জেলায় ৮৩ হাজার ৩৬৯ হেক্টর জমি আবাদে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ লক্ষ ৬ হাজার ১৬২ মেট্রিক টন। মৌলভীবাজারে ১ লক্ষ ২ হাজার ১৮০ হেক্টর চাষাবাদে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লক্ষ ১ হাজার ৯১৮ মেট্রিক টন। হবিগঞ্জে আমন চাষাবাদ হয়েছে ৮৮ হাজার ৩১৬ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ২ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭০৯ মেট্রিক টন চাল।
ইতিমধ্যে বিভাগের ১৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে আর আগামী মাসের বাকি ধান কাটা হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে সিলেটের কৃষি বিভাগ।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনাবৃষ্টির কারণে আউশ আবাদ হয়নি। এজন্য কৃষকেরা আগাম আমন চাষ করছেন। বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধানের আবাদ ভালো হয়েছে। যার ফলে কৃষকদের মধ্যেও স্বস্তি বিরাজ করছে। তবে অনেক স্থানে পোকার আক্রমণের কথাও জানা গেছে।
কৃষকরা জানান, আমন চাষে সার, বীজসহ সবকিছুর দাম বাড়ায় গত বছরের তুলনায় একরপ্রতি খরচ বেশি হয়েছে। বাজারে এখনো নতুন ধান বিক্রি শুরু হয়নি। ধানের বাজার মোটামুটি ভাল থাকায় খরচ তুলে লাভের আশা করছেন তারা।
সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মোহাম্মদ আনিসুজ্জামন বলেন, আমন চাষে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে শতভাগ ধান কৃষকেরা ঘরে তুলতে পারবেন। অনেক কৃষক আমন ধান ঘরে তুলে বোরো ধান চাষ করেন। তাঁরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আমন ধান কেটে বোরো ধান চাষ করবেন। এবছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে নতুন রোপণ করা সবজির কিছুটা ক্ষতি হলেও, আমন ধানের কোন ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। বিভাগের কিছু কয়েক জায়গায় ধানে পোকার আক্রমণের করেছে। বিষয়টি কৃষি বিভাগকে সাথে সাথে জানালে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হত। কয়েকদিন পরেই সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। সরকার এ বছর প্রতি মণ ধানে দাম ১২০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/নাজাত