দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই রাজনীতির মাঠে ঘটছে নতুন ঘটনা। এরই মধ্যে সিলেট -৪ গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
 

সমান তালে চলছে লবিং-গ্রুপিং, জনসংযোগ এবং নেতাকর্মীদের নিজের বলয়ে নিয়ে আসার চেষ্টাও। এবারের নির্বাচনে সিলেট চার আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন ৮ জন। এর আগে ঈদ-পূজাসহ নানা উৎসব উপলক্ষ্যে নিজ এলাকায় গিয়ে সামাজিক কর্মকাণ্ড, শুভেচ্ছা বিনিময় ও গরিবদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহের কথা জানান দেন তারা।
 


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের প্রায় প্রত্যেকেই দলীয় পেশাজীবী সংগঠনের নেতা। তাদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে যুক্ত। কেউ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান নেতা। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সরকারি কলেজের অধ্যক্ষও রয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের এ তালিকায়। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মনোনয়ন দৌড়ে আছেন ছাত্রজীবন থেকে দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং আইন পেশায় নিয়োজিত খ্যাতিমান আইনজীবীরা। দলের শীর্ষপর্যায় থেকে ইতোমধ্যে অনেকেই ‘সবুজ সংকেত’ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তারপরও দলের শীর্ষপর্যায়ে যোগাযোগ ও তদবির অব্যাহত রেখেছেন তারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট চার আসন থেকে এ পর্যন্ত  আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৮ জন।
 

তাদের মধ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলা থেকে ৪ জন, জৈন্তাপুর উপজেলা থেকে ২ জন এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে ২ জন।
 

জৈন্তাপুর উপজেলা থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। ইমরান আহমদ ১৯৮৬ সালে সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। তিনি ১৯৮৬. ১৯৯১, ১৯৯৬. ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন। তিনি পঞ্চম জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি সপ্তম জাতীয় সংসদে সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতি এবং বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় সম্পর্কীয় কমটির সদস্য ছিলেন।
 

তিনি নবম জাতীয় সংসদে লাইব্রেরি কমিটি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
 

দশম জাতীয় সংসদে তিনি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদে প্রথমে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ে প্রতিমন্ত্রী এবং ৩ মাসের মাথায় পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক আহমদ। ফারুক আহমদ এর আগে ২০০৮,২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছিলেন।
 

ফারুক আহমদ জানান, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্ধীতা মূলক করে তুলার জন্য এ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
 

এ আসন থেকে আরো যারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন তাদের মধ্যে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বর্তমান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মাহফুজুর রহমান। গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্র লীগের প্রতিষ্টাতা সভাপতি মোঃ ফজলুল হক। ফজলুল হক এর আগে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছিলেন।
 

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাপ মিয়া, গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম কিবরিয়া হেলাল। গোলাম কিবরিয়া হেলাল দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছিলেন।
 

জাতীয় শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য, জাতীয় শ্রমিকলীগ সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ও শ্রম আদালত সিলেটের শ্রমিক প্রতিনিধি নাজমুল আলম রোমেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেট জজ কোর্টের সহকারী পিপি এডভোকেট শাহজাহান চৌধুরী।


 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/মতিন/এসডি-৪৩৬