সিলেটের জকিগঞ্জের শরীফগঞ্জ বাজার জামে মসজিদের নতুন ভবন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সরকারি জায়গার ওপর নির্মাণের অভিযোগ ওঠেছে মসজিদ পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে ১৪৪ ধারা জারির আবেদন করেছেন হাসিতলা গ্রামের বাসিন্দা মহিউদ্দিন।
পরে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফয়সাল সরেজমিন তদন্ত করে জকিগঞ্জ থানা পুলিশকে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে মহিউদ্দিন উল্লেখ করেন, পিল্লাকান্দি খালপার গ্রামের আজবর মাহির একমাত্র উত্তরাধিকারী তছির আলী মির্জাপুর মৌজার এস.এ ৬৯৩ নং খতিয়ানের এস.এ ৪০৭ দাগের ২৪ শতক ভূমি শরীফগঞ্জ বাজার জামে মসজিদে ১৯৮৭ সালে রেজিষ্ট্রি ওয়াকফ করে দান করার পর শরীফগঞ্জ বাজার জামে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। মসজিদের দক্ষিণে জকিগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক ও পশ্চিমে সোনাসার শরীফগঞ্জ এলজিইডির সড়ক অবস্থিত। মসজিদের স্বঘোষিত মোতাওয়াল্লী ও তছির আলীর উত্তরাধিকারী তাহের আলীগং পরষ্পর যোগসাজসে অনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে মসজিদের ভূমির পূর্বাংশের ও উত্তরাংশের কিছু ভূমি বিভিন্ন লোকদের নিকট বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন সোনাসার-শরীফগঞ্জ রাস্তার জায়গা দখল করে জোরপূর্বক মসজিদ পুনঃনির্মাণ শুরু করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। দাঙ্গা খুন-খারাবিসহ শান্তি শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
খবর নিয়ে জানা গেছে, শরীফগঞ্জ বাজার জামে মসজিদ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। মসজিদ কমিটি ও আরেকটি পক্ষের মধ্যে মামলা পাল্টা মামলা চলমান রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আপস বৈঠক হলেও পুরোপুরি নিষ্পত্তি হয়নি।
সর্বশেষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফয়সাল সরেজমিনে গিয়ে মসজিদের বিরোধ নিষ্পত্তি করে গত ৩০ অক্টোবর এক স্মারকে উল্লেখ করেন, মসজিদের ভূমির সাথে সড়ক ও জনপথ দপ্তরের পক্ষে অধিগ্রহণকৃত কিছু সরকারী ভূমি সম্পৃক্ত রয়েছে। উক্ত সরকারী ভূমি মসজিদের মুসল্লীগণের স্বার্থে মসজিদ কমিটি ব্যবহার করতে পারবেন তবে কোন প্রকার স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা যাবেনা বলে উল্লেখ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন আদেশ থাকার পরও মসজিদ পরিচালনা কমিটি সরকারি কিছু জায়গা যুক্ত করে মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
অন্যদিকে সরকারি জায়গার ওপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনা আছে।
এলাকার একাধিকজন জানান, তছির আলীর দানকৃত এস.এ ৬৯৩ নং খতিয়ানের এস.এ ৪০৭ দাগের ২৪ শতক ভূমি চিহ্নিত করে মসজিদ নির্মাণ করা হলে বিরোধ নিরসন হবে। মসজিদকে কেন্দ্র করে এলাকায় দুটি বিবাদমান পক্ষ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। যেকোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা আছে।
এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম জানান, মসজিদের জায়গার ওপর মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। সরকারি জায়গা দখল করে মসজিদ নির্মাণের বিষয়টি পুরোপুরি মিথ্যা। একটি পক্ষ মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ করে হয়রানী করে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফয়সাল বলেন, মসজিদের সীমানা চিহ্নিত করে দিয়েছি। সরকারি জায়গায় কোন স্থাপনা নির্মাণ করা যাবেনা এমন একটি আদেশও দিয়েছি। ১৪৪ ধারার জন্য একটি মামলা করা হয়েছে। সেই মামলার তদন্ত চলছে। প্রতিবেদনে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/হাছিব/এসডি-৬৮৮