সিলেট বিভাগে গত জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৭২ হাজার ৮৪০টি আয়কর রিটার্ন জমা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ২৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আয়কর জমা হয়েছে। শুধু নভেম্বর মাসেই ৪৪ হাজার ৫৩১টি রিটার্ন জমা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ১২ কোটি ১১ লাখ টাকা আয়কর জমা হয়েছে।

 



কর অঞ্চল সিলেট সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, করের অর্থবছর শুরু হয় জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সিলেট অঞ্চলে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৫০ কোটি টাকা। এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গত অর্থবছরে করদাতারা ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা আয়কর দিয়েছেন। এবার সিলেটে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রাও পূরণের কাছাকাছি চলে এসেছে। প্রায় ৪০ শতাংশ কর আদায় হয়ে গেছে।

 


১০ বছর ধরে সিলেটে কর আদায় ঊর্ধ্বমুখী। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নেপথ্যে কাজ করছেন সিলেট কর অঞ্চলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। করদাতাদের উৎসাহ দিতে সারা বছরই ভ্রাম্যমাণ মেলা, মাইকিং, সভা, সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়কর রিটার্ন জমাসহ তথ্যসেবা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ব্যবসায়ী, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে আয়কর সম্পর্কে সভা-সেমিনার করা হয়। পাশাপাশি নতুন কর আইন ও অনলাইন রিটার্ন দাখিল সম্পর্কে করদাতাদের সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে কর্মশালা ও সভার আয়োজন করা হচ্ছে।

 


দুই অর্থবছর ধরে সিলেট জেলার সর্বোচ্চ করদাতা হয়েছেন আমদানি ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আবুল কালামের স্বত্বাধিকারী মো. আবুল কালাম। তিনি বলেন, ‘কর প্রদানে সিলেটের মানুষজন বরাবরই আন্তরিক। আমদানির ক্ষেত্রে কর আগে দিয়েই পণ্য আনতে হয়। তাই কর দেওয়ার ব্যাপারে আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক সচেতন। দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সবার উচিত নিয়মিত কর প্রদান করা। কারণ দেশের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’

 


এ ব্যাপারে কর অঞ্চল সিলেট সদর দপ্তরের উপকর কমিশনার একেএম ইসমাইল আহম্মেদ বলেন, ‘সিলেটের মানুষ বরাবরই কর দিতে আন্তরিক। এটা  বোঝা যায়, বিগত ১০ বছরের কর আদায়ের পরিসংখ্যান দেখলে। ১০ বছর ধরে সিলেটে কর আদায় ঊর্ধ্বমুখী। করসেবা সহজীকরণ করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। করদাতাদের সুবিধার্থে বর্তমানে অনলাইন রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া চালু করেছি এবং এর ফলও আমরা পেয়েছি। গত অর্থবছরেও আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি কর আদায় হয়েছে। এ বছর অর্থবছরের পাঁচ মাস চলছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ কর আদায় হয়ে গেছে। আশা করছি, এই অর্থবছরেও আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে কর আদায় হবে। সিলেটের করদাতারা কর প্রদানে অত্যন্ত আন্তরিক। তাই তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’

 


উল্লেখ্য, ‘আয়করে প্রবৃদ্ধি দেশ ও দশের সমৃদ্ধি’, ‘কর দেব গড়ব দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নভেম্বরে চলা মাসব্যাপী আয়কর মেলা শেষ হয়েছে। করসেবা সহজীকরণ ও ‘কর তথ্যসেবা মাস’ উপলক্ষে নগরীর মেন্দিবাগ এলাকার কর ভবনে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডি.আর