বৃষ্টি নামলেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায় গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের সালুটিকর - গোয়াইনঘাট গাংকিনারী রাস্তার প্রায় আড়াই কিলোমিটার।
নন্দিরগাওঁ ইউনিয়ন পরিষদ, সালুটিকর বাজার কিংবা কচুয়ারপার, দারিরপার ও দারিকান্দি গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না জরুরি সেবার কোনো গাড়ি। এমনকি মসজিদ বা গোরস্থানে যেতেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীর। কাঁদা মাড়িয়েই স্কুল-কলেজে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটি মাটি ও বৃষ্টির পানির সংমিশ্রণে কাদার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। কচুয়ারপার গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মাসুম আহমদ জানান,নন্দিরগাওঁ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানবৃন্দ সালুটিকর - গোয়াইনঘাট সড়ক হইতে কচুয়ারপার গ্রামের রাস্তা নির্মাণে কিছুটা মাটির কাজ করেন। পরবর্তীতে গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস কামরুল হাসান আমিরুল নন্দিরগাওঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই হাওরবাসীকে নতুন করে রাস্তার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন।
তিনি সালুটিকর - গোয়াইনঘাট সড়ক হইতে কচুয়ারপার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার মাটির সড়ক নির্মাণ করে হাওরবাসীর প্রশংসা কুড়ান। নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেম্বার রহিম উদ্দিন বলেন,শুধু মেইন সড়ক নয় কচুয়ারপার, দারিপার ও দারিকান্দি গ্রামের অব্যন্তরীন মাটির সড়কের পাশাপাশি দারিরপার গ্রামের সামনে হাফ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ করেন।
সিলেট জেলা যুবলীগের সহসম্পাদক মহিউদ্দিন মহি বলেন, এস কামরুল হাসান আমিরুল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর সিলেট চার আসনের সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদক এই রাস্তাটিকে সালুটিকর - গোয়াইনঘাট গাংকিনারী রাস্তা ঘোষণা করেন এবং এবং রাস্তায় মন্ত্রী মহোদয় শতাধিকবার পরিদর্শন করেন। ইউপি চেয়ারম্যান এস কামরুল হাসান আমিরুল ও মন্ত্রী মহোদয় মিলে হাওরবাসীকে শিক্ষার দিকে এগিয়ে নিতে কচুয়ারপার উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্টা করেন। উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দাবি জানিয়েছেন।
কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। তাই ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এই এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু মাটির এ রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় বিপল যাচ্ছে সকল উন্নয়ন। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীনেশ বলেন চেয়ারম্যান আমিরুল ও এমপি মহোদয় এই কাঁচা রাস্তাটি নির্মাণ করে দিয়েছেন। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু এলাকায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায়।
এছাড়াও পাশের মাঠের সব ফসল এই রাস্তা দিয়ে বাড়ি নিতে হয়। এই রাস্তা দিয়েই কৃষি পণ্য বাজারজাত করা হয়। আমাদের এ কষ্ট কবে দূর হবে তার কোনো ঠিক নেই। কচুয়ারপার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকেয়া বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। জরুরি সেবার কোনো গাড়ি বা যেকোনো গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। হিন্দু বা মুসলিম কেউ মারা গেলে কাঁদার কারণে সৎকার, দাফন-কাফনে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। রাস্তাটি পাকাকরণ এখন সময়ের দাবি। দারিপার গ্রামের স্বদেব নমশূদ্র বলেন, আমাদের এলাকায় কচুয়ারপার উচ্চ বিদ্যালয়, কচুয়ারপার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কচুয়ারপার কমিউনিটি ক্লিনিক আরো ৪/৫ টি মসজিদ ও মন্দির রয়েছে।
চেয়ারম্যান এস কামরুল হাসান আমিরুলের সহযোগিতায় সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি এসব প্রতিষ্টান প্রতিষ্টা মাটির সড়ক নির্মাণে একক অবদান রেখেছেন। কচুয়ারপার গ্রামের প্রবীন মুরব্বি ওয়ারিছ উদ্দিন লারু বলেন মাননীয় সংসদ সদস্য প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে কচুয়ারপার মাটির রাস্তা নির্মাণ করেন কিন্তু উপুর্যুপরি পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় এসব মাটি নিয়ে যায় নদীতে। ফলে পুনরায় প্রতিবছর মাটির কাজ করতে হয়। তিনি বলেন এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য দ্রতু সড়কটি পাকা করতে হবে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম / মতিন/ নাজাত