জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে সিলেট নগরীর ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী এবং ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহিভর্‚ত কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আগামী ২৪ অক্টোবর এ কার্যক্রম শুরু হবে। টিকা গ্রহণে আগ্রহীদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে।

বুধবার সিলেট সিটি কর্পোরেশনে অনুষ্ঠিত এ বিষয়ক এক সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।


সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৩৪ হাজারের অধিক কিশোরীকে এই টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে সভায় জানিয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম।

সমন্বয় সভায় বলা হয়, জরায়ুমুখ ক্যান্সার হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস জনিত একটি প্রাণঘাতী প্রতিরোধযোগ্য রোগ। এই রোগ বাংলাদেশের নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুতে দ্বিতীয়। অতিরিক্ত সাদা স্রাব, দুর্গন্ধযুক্তস্রাবে, অনিয়মিত রক্তস্রাব, শারীরিক মিলনের পর রক্তপাত, মাসিক বন্ধ হওয়ার পর পুনরায় রক্তপাত, কোমর, তলপেট, উরুতে ব্যাথা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ। 
বাল্যবিবাহ, ঘন ঘন সন্তান প্রসাব, ধূমপায়ী, এইডস রোগী, প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন নন এমন নারীরা এই রোগের ঝুঁকিতে থাকেন। কিশোরী বয়সে এইচপিভি টিকা নিলে নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।

এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণির ছাত্রী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নয় এমন ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের এক ডোজ এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে। আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ১৮ কর্মদিবস এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। টিকা নিতে ছাত্রীদের www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে। নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজন হবে কিশোরীদের ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর। শুধুমাত্র নির্ধারিত ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত কিশোরীরাই বিনামূল্যে এই টিকা পাবে।    
এইচপিভি টিকা পাওয়ার যোগ্য ছাত্রী বা কিশোরীরা নিজেদের উদ্যোগে অথবা বিদ্যালয়ের সহযোগিতায় নিবন্ধন করতে পারবে। নিবন্ধনের পর ২৪ অক্টোবর থেকে বিদ্যালয়ের ক্যাম্পিং থেকে এবং যারা অধ্যায়নরত নয় তারা নিকটস্থ টিকা কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে পারবে।

সনন্বয় সভায় জানানো হয়, এইচপিভি টিকা অত্যন্ত নিরাপদ। যা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত। তবে খুব কম ক্ষেত্রে টিকার স্থানে লালচে ভাব, ব্যথা বা ফুলে গেলে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। এ নিয়ে কোনো ধরনের ভয় বা আতঙ্কের কিছু নেই। ইতোপূর্বে ঢাকায় এই টিকা প্রদান কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে টিকার কোনো পাশর্^ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এইচপিভি টিকা দেয়া শেষ হলে টিকা কার্ডটি যতœ সহকারে সংরক্ষণ করতে হবে। ভবিষ্যতে বিদেশযাত্রা সহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা এবং টিকা পাওয়ার প্রমাণস্বরূপ টিকা কার্ডটি প্রয়োজন হতে পারে বলেও সভায় জানানো হয়।

সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আশিক নূর। সভায় বক্তব্য দেন, বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার ডা. এসএম খালিদ, সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত এরশেদ, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আব্দুর রফিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেটের উপ পরিচালক শাহ মো. নজরুল ইসলাম, ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব প্রমুখ।
 

 

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-৭৯৯৩