কোনো ধরণের তদবির ছাড়া মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে নিয়োগ পেয়ে মহাখুশি সুনামগঞ্জ জেলার ১২ থানার ৭২ জন তরুণ-তরুণী। নিয়োগ পাওয়া বেশির ভাগ তরুণ-তরুণী কৃষক, শ্রমজীবীসহ হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। পুলিশে চাকরি পেয়ে পরিবারের হাল ধরতে পেরে আবেগে আপ্লুত ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা।
 

বৃহস্পতিবার বিকালে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত কনস্টেবল বরণ অনুষ্ঠানে পুলিশ বিভাগ ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এই তরুণ তরুণীরা।
 


এক প্রেসবিফিংয়ে জেলা পুলিশ জানিয়েছেন, চলতি বছরের সেপ্টম্বরে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) মোট ২৫১০ জন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রাথমিক কাগজপত্র যাচাই ও মাঠ পরীক্ষার মাধ্যমে ৫৭৪ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। লিখিত পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ ২০৩ জন প্রার্থী মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন ৭২ জন তরুণ-তরুণী। এরমধ্যে ৬৬ জন পুরুষ সদস্য ও ৬ জন নারী সদস্য রয়েছেন।
 

নিয়োগ পাওয়া শাল্লা উপজেলার বন্যা রাণী দাশ বলেন, আমার বাবা একজন কৃষক। তাঁর আয় দিয়ে আমাদের সংসার চলে। আমি মাত্র ১২০ টাকা খরচ করে নিয়োগ পেয়েছি। আমার পরিবার অনেক খুশি। আমি চাই আমি আমার পরিবার দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে।
 

জামলাগঞ্জ উপজেলার স্বর্মিলা বলেন, আমার বাবা একজন কাঠ মিস্তি। তিনি অনেক কষ্ট করে আমাদের মানুষ করেছেন। অভাব অনটনের মধ্যেও আমাদের পড়া শোনা ছাড়ননি। পুলিশের আসার আগে অনেকেই বলতো পুলিশে নিয়োগ পেতে লাখ লাখ টাকা ঘুষ লাগে। কিন্তু আমি মাত্র ১২০ টাকায় যোগ্যতা দিয়ে নিয়োগ পেয়েছি।
 

সাইফুল ইসলাম নামের আরেক নিয়োগপ্রাপ্ত তরুণ বলেন, আমার বাবা একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। পুলিশে চাকরি করা ছিল আমার ও আমার বাবার জন্যে স্বপ্নের। আজ সেই স্বপ্ন পুরুন হয়েছে। আমি পুলিশ বিভাগের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।
 

ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার সকল ধাপ যোগ্যতা ও মেধা ভিত্তিক সঠিক নিয়মে সম্পন্ন করা হয়েছে। সমাজের নানা স্তরের মানুষ, বিশেষ করে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেধাবী সন্তানেরা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের সুযোগ পেয়েছেন। এ নিয়োগ তাদের জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে।

 

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/শহীদনুর/এসডি-৯০৯৭