ভারতের দক্ষিণী চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা। তবে দক্ষিণী সিনেমা দিয়ে তার উত্থান হলেও এখন বলিউডেও অভিনয় করছেন। এই সময়ে তার ক্যারিয়ারের দারুণ সময় পার করছেন। এ মাসেই মুক্তি পেয়েছে রাশমিকা অভিনীত বছরের ধামাকা ছবি ‘পুস্পা ২’।
বছরের সর্বাধিক আয়ের ছবির তকমা পেয়েছে ‘পুস্পা ২’।
সেই রাশমিকাকে নিয়ে এ দেশের ওয়াজ মাহফিলে কথা বলেছেন এক মাওলানা। তার বয়ানে উঠে এলো এই অভিনেত্রীর নাম। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির সৌন্দর্যের উদাহরণ দিতে গিয়ে বিশিষ্ট ধর্মীয় বক্তা আমির হামজা রাশমিকাকে বিশ্বের অন্যতম সুন্দরী হিসেবে আখ্যা দিলেন।
যদিও তিনি রেফারেন্স দিয়েছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের।
একটি ওয়াজ মাহফিলের ভিডিওতে দেখা যায়, আমির হামজা বলছেন, ‘এখন বিশ্বে যত সুন্দর মানুষ আছে; আপনারা ইন্টারনেট ঘাঁটবেন। ২৫৭টা রাষ্ট্রের মধ্যে চেহারার কাটিংয়ে ১ নম্বরে রয়েছেন রাশমিকা মান্দানা। নাম শুনেছেন? চেহারার কাটিংয়ে এখন ১ নম্বরে আছেন।
এই মহিলার দিকে একটু আল্লাহর নাম নিয়ে তাকাবেন। দেখেন তো কী সুন্দর করে আল্লাহ তাকে বানিয়েছেন। এর চেয়ে শতগুণে সুন্দর ছিলেন আমাদের আদি মাতা হাওয়া (আ.)।’
কয়েক দিন আগে দেওয়া সেই বক্তব্য মোটামুটি ভাইরাল। গতকাল এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ পায়।
তাদের কারো সমালোচনায় পড়েন আমির হামজা। আজ বিকেলে সেই সমালোচনার জবাব দিয়েছেন তিনি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। তিনি প্রিয় তৌহিদি জনতাকে সালাম দিয়ে বলেন, ‘আপনাদেরকে বারবার আশাহত করার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি, ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আপনাদের কিছু কথা বলা জরুরি মনে করছি। যাতে আপনারা আমার বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে ইনসাফ করতে পারেন। ঢালাওভাবে যেসব কথাবার্তা চারদিকে বলা হচ্ছে তার সবটুকুই কি সঠিক? নাকি ভিন্ন বাস্তবতা আছে? সম্প্রতি সিরিয়ার কারাগার থেকে মুক্ত বন্দিদের চিত্র আপনাদের সামনে। তারা অনেকেই নিজের নাম পর্যন্ত ভুলে গেছে। ফ্যাসিস্টের কারাগারে থাকাকালীন এমন কোনো নির্যাতন নাই, যা আমার ওপরে করা হয়নি। আমার ব্রেইনে পর্যন্ত কারেন্ট শক দেওয়া হয়েছে ও স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। বাকি নির্যাতনের কথা আর না বলি। আমি স্বীকার করছি মানসিকভাবে আমি পুরোপুরি সুস্থ না। শারীরিক ও মানসিক কোনো দিক দিয়েই আমি ফিট না। নিজের অজান্তেই অসংলগ্ন কথাবার্তা মুখে চলে আসছে। আমার আচরণও আমার নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। এসব চিন্তা আমাকে আরো অসুস্থ করে তুলেছে।’
তার বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আর আমার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে চলমান যে বিতর্ক। সেই আলোচনাটাতে শুধুমাত্র উক্ত নায়িকার আলাপটুকুই আমার ভুল হয়েছে আমি স্বীকার করছি। তবে যদি আলোচনাটি পুরোপুরি শোনেন তাহলে দেখবেন আলোচনাটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ভবিষ্যতে আমি আরো সতর্ক থাকার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।’
নিজের অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এখন আপনারা বলতে পারেন আমি যেহেতু মানসিক ও শারীরিকভাবে ফিট না তাহলে এত মাহফিল কেন করছি? সে ক্ষেত্রে আপনাকে বলব আপনি কিছুক্ষণ আমার জায়গায় দাঁড়ান ভাই, প্লিজ! তারপর ভাবুন। খোলামেলা আপনাদের বলছি, জামায়াতের কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা, শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ যখন একটা মাহফিলের জন্য রিকুয়েস্ট করে তখন আমার কী করার থাকতে পারে বলুন? শুধুমাত্র ভিআইপিদের রিকুয়েস্ট রাখতে গেলেই সাধারণ জনতা তো বহুদূর, জেলা দায়িত্বশীল ও আত্মীয়-স্বজনদের রিকুয়েস্ট রাখাও সম্ভব হয় না।’
তিনি লেখেন, ‘অন্যদিকে ফ্যাসিস্ট-পরবর্তী সময়ের অবাধ স্বাধীনতা তাফসির মাহফিল আয়োজনকে আরো ত্বরান্বিত করেছে। তার একটি প্রেসার, অন্যদিকে শায়খ মিজানুর রহমান আজহারি ভাই দেশে না থাকায় আরো একটি চাপ সাথে যুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে যথাযথ শারীরিক, মানসিক ও একাডেমিক প্রস্তুতি গ্রহণ করার সুযোগ পাইনি। যার ফলেই মাঝেমধ্যে এমন ত্রুটি, ভুল আমার দ্বারা হয়ে যাচ্ছে। আমি আবারও বলছি আমি সুস্থ না। অন্যদিকে বাস্তবতার শিকার। যেখানে সুস্থ মানুষের পক্ষেই এত প্রগ্রাম, জার্নি করা অসম্ভব হয়ে যায়, সেখানে আমার মতো অসুস্থ ব্যক্তির বর্তমান অবস্থা কি একটু ভেবে দেখবেন। আমি আপনাদের কাছে আবারও ক্ষমা চাই এবং এই সিজনে আমার ভুলভ্রান্তিগুলো দিয়ে প্রকৃত আমাকে জাজ কইরেন না দয়া করে। আমি কথা দিচ্ছি, পরবর্তী বছরগুলোতে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি ও আমার যথাযথ ট্রিটমেন্ট নিয়ে তাফসির মাহফিলে অংশগ্রহণ করব ইনশাআল্লাহ। সাথে গণহারে দাওয়াত নেওয়া বন্ধ করে দেব। বিশেষ দোয়াপ্রার্থী, আমির হামজা’
সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডেস্ক /মিআচৌ