জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলায় যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের রাজধানী তথা জাতিসংঘের শহর নিউইয়র্ক এবং আশপাশের অবস্থা কেমন হবে সে আলোকে পরিবেশবিজ্ঞানীরা একটি মানচিত্র তৈরি করেছেন। যা ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত ‘নিউজউইক’ পত্রিকা।

 


এই ইন্টারেকটিভ মানচিত্র অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং বন্যা অবিশ্বাস্য রকমভাবে বৃদ্ধির জন্য ম্যানহাটনের অংশবিশেষ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হবে। এই সিটির বাইরের প্রান্তে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।

 

ব্রুকলিন নেভি ইয়ার্ড, ইস্ট রিভারসংলগ্ন ঐতিহাসিক শিল্প-কমপ্লেক্স প্লাবিত হতে পারে। এর বাইরে নিউইয়র্ক স্টেটের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের মধ্যে লং আইল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূল এবং পাশের দ্বীপসমূহ এবং ফ্রিপোর্ট ও আইল্যান্ড পার্কসহ সাফোক এবং নাসাউ কাউন্টির বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। সমুদ্রসৈকত গিলগো এবং জোন্সবিচসহ আশপাশের বড় একটি অংশ পানির নিচে চলে যাবে। দ্বীপসমূহ অস্তিত্বহীন হয়ে পড়তে পারে। ফায়ার আইল্যান্ডও প্লাবিত থাকবে বছরের বাকিটা সময়। একই কারণে লং আইল্যান্ড এবং ব্যারিয়ার আইল্যান্ডের মধ্যে অনেক নিচু এলাকার বাসাবাড়ি তলিয়ে যাবে অর্থাৎ সেগুলোতে বসবাস করা সম্ভব হবে না।

 

ওয়েস্টচেস্টারের কিছু অংশও ঝুঁকিতে থাকবে। এমন আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থাৎ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এবং ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করার জন্য নিউইয়র্ক সিটি বেশ কটি বৃহৎ এবং ব্যয়বহুল প্রকল্পের পরিকল্পনা নিয়েছে। সমুদ্র-দেয়াল নির্মাণের এসব প্রকল্পে প্রয়োজন হবে বিপুল অর্থ। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন বরাদ্দে কতটা সায় দেবে তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ আর সংশয়। কারণ ব্যক্তিগতভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো যুক্তিকে আমলে নেন না। এটি নাকি হাস্যকর একটি ইস্যু। যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক প্রভাব ইতোমধ্যে মার্কিনিদের গ্রাস করছে।

 

আবহাওয়ার বৈপরীত্য সুধীজনকে নাড়া দিলেও ট্রাম্প তা বিশ্বাস করছেন না বলে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পরও মন্তব্য করেছেন এবং এ খাতে কোনো অর্থ বরাদ্দে সম্মতি না দেওয়ার অভিপ্রায়ও প্রকাশ করেছেন। স্মরণ করা যেতে পারে, করোনা মহামারি নিয়েও ট্রাম্পের বালখিল্যতার খেসারত দিতে হয়েছে বহু আমেরিকানের প্রাণের বিনিময়ে। ক্লাইমেট সেন্ট্রালের গবেষকদের তৈরি মানচিত্রটি আমলে নিতে হাসি-তামাশা অথবা উদাসীনতার অর্থ হবে মানবতাকে বিপন্ন করার শামিল-অভিমত পরিবেশবিজ্ঞানীদের।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক