সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ ‘সাদাপাথর’ পর্যটন কেন্দ্রের মতো প্রকৃতিকন্যা জাফলংয়ে চলছে পাথর লুট। জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে গত কয়েক মাস ধরে প্রতিদিন শত শত নৌকায় কোটি কোটি টাকার পাথর হরিলুট করা হয় বলে জানা গেছে স্থানীয়দের কাছ থেকে। কোন অভিযান, জরিমানা, মামলা কিছুই থামাতে পারছেনা লুটপাটকারীদের। লুটপাটের রাস্তা বন্ধ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে একটি পাথরও থাকবে না সেখানে।
ইতিপূর্বে সেনাবাহিনী জাফলং ও ভোলাগঞ্জে নজরদারি করে। সেনাবাহিনী ও ছাত্র-জনতা উক্ত পর্যটন কেন্দ্রের পাথর রক্ষায় মাইকিং করে পাথর লুট রোধে কাজ করায় কিছুদিন লুটপাট বন্ধ ছিল।
কিন্তু ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কিছুদিন পর পাল্টে যায় সবকিছু। বেপরোয়া হয়ে উঠে পাথর লুট চক্র। জাফলং জিরো লাইন থেকে সেনাবাহিনী চলে গেলে শুরু হয় তাদের লুটযজ্ঞ।
বেসামাল এই পরিস্থিতি সামাল দিতে জাফলংয়ের পাথর রক্ষায় কয়েক সপ্তাহের জন্য নিয়োগ করা হয় দুজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্ব একটি ক্যাম্প। কিন্তু ক্যম্পটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার পর আবারও চলছে পাথর লুট।
স্থানীয়রা জানান, শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর সীমান্তঘেঁষা সাদাপাথর ও জাফলং পাথর কোয়ারি থেকে পাথর লুট করতে নামে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। একইভাবে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর কেন্দ্রেও চলে লুটপাট। সেখানে ছাত্র-জনতা লুটেরাদের তাড়িয়ে দেওয়ার পর সেনাসদস্যরা অবস্থান নেন। কিন্তু জাফলংয়ে তখনও চলছিল বাধাহীন লুটপাট।
জানা যায়, দুটি পর্যটন কেন্দ্রই পাথর কোয়ারি এলাকায়। সীমান্তঘেঁষা সাদা পাথর ও জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে স্তূপ আকারে পাথর জমে উঠেছে। সেখানকার পাথরই পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ।
জাফলংয়ের বাসিন্দা আলাছ উদ্দিন বলেন, কয়েক মাসে হিসাব ছাড়া পাথর লুট হয়েছে। কোন ভাবেই তাদেরকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছেনা।
স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, জাফলং জিরো পয়েন্টের পাথর প্রকাশ্যে হরিলুটের বিষয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া,অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। কিন্তু জেলা ও উপজেলা প্রশাসন নিরব।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সাইদুল ইসলাম বলেন, জাফলং জিরো লাইনের পাথর রক্ষায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। পাশাপাশি পাথর লুটকারীদের উপর মামলাও হয়েছে। তবুও পাথর চুরি বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এছাড়াও পাথর লুট করে নিয়ে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করার জন্য দেয়াল নির্মাণ করতে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের লাঞ্ছিত করেছে পাথর লুটকারীরা।
সিলেটভিউ২৪ডটকম / মতিন / সানি-৬