সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলং সেতু সংলগ্ন এলাকায় সেইভ মেশিন দিয়ে বালু -পাথর উত্তোলন ও সেতুর নিচে বালুরঘাট তৈরি করায় জাফলংয়ের পিয়াইন নদীর উপর নির্মিত জাফলং সেতু ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এছাড়াও পিয়াইন নদী থেকে বালু নিয়ে আসতে জাফলং সেতুর দক্ষিণ-পূর্ব পাড়ে জাফলং চা বাগানের গাছপালা বনভূমি উজাড় করে একটি অবৈধ রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এতে জাফলং চা বাগান ধ্বংসের মহড়া চলছে বলে অভিযোগ করে স্থানীয়রা। প্রায় ৩৫কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৬০ মিটার এ সেতুটি ২০১৮ সালের পহেলা বৈশাখ জনসাধারণ এবং যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
 

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেতুর আশপাশে কোন ধরনের বালু, পাথর উত্তোলন বন্ধের কঠোর নির্দেশনা থাকলেও তা আমলে নিচ্ছেনা পাথর-বালু খেকু চক্র।এই সেতুটি তৈরি হওয়ার ফলে স্থানীয় এবং উপজেলার অপরাপর ইউনিয়নের জনসাধারণের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার পথ সুগম হয়। পাশাপাশি অত্রাঞ্চলের কৃষি, পর্যটন ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু বালু উত্তোলনকারী প্রতারক চক্রের দ্বারা বর্তমানে এখানকার পরিবেশকে বিনষ্ট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।


সরেজমিনে দেখা যায়, ফেলুডার দিয়ে উক্ত জায়গায় বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে জাফলং সেতুর প্রায় প্রতিটি পিলারের নিচে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বালু উত্তোলনের জন্য বনভূমি এবং গাছপালা কেটে বাগানের তীর ঘেঁষে একটি অবৈধ রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
 

স্থানীয়রা জানান, জাফলং মুমিনপুর গ্রামের জুলহাস, জাফলং চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি নিরঞ্জন গোয়ালাসহ বালু লুটপাটকারী একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের শেল্টারের এখানে গড়ে উঠেছে এই অবৈধ বালুরঘাট। ঘাট তৈরি করে প্রতি রাতে এখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু উত্তোলন করা হয়। ইসিএ এলাকা হওয়ায় উক্ত স্থানে বালু, পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকার নির্দেশনা থাকলেও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।

 

অবৈধ বালুঘাটের মালিক জুলহাস মিয়া কোন মন্তব্য করেননি। তবে জাফলং চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নিরঞ্জন গোয়ালা বলেন, সব জায়গায় সালামি দিয়ে এই ঘাট তৈরি করেছি। আমাদের দলনেতা জুলহাস মিয়া ভাই সবার সাথে যোগাযোগ করেন।

 

এ ব্যাপারে জাফলং চা বাগানের ব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন খান  জানান, বিষয়টি অত্যন্ত নোংরা এবং পরিবেশ বিদ্বেষী। আমার বাগানের ক্ষতি সাধন করে এমন কিছু করা হয়ে থাকলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

 

গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ সরকার তোফায়েল  বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, পুলিশ পাটিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সাইদুল ইসলাম  বলেন, ইসিএ এলাকায় কোন ক্রমেই অবৈধভাবে বালু, পাথর উত্তোলন চলবে না। তবে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে (বার্কি নৌকায়) বালু নৌকা চলার শিথিলতা রয়েছে। সেতু ধ্বংস করে যন্ত্রদানব চালিয়ে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে একাধিক মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/মতিন/এসডি-২১