সুইডেন নাগরিকত্ব অর্জনের নিয়ম আরো কঠোর করতে চায়। সুইডিশ সরকার মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে।
ইতিমধ্যে একটি সরকারি পর্যালোচনায় নাগরিকত্ব পাওয়ার শর্ত হিসেবে ‘সৎ জীবন যাপন’ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নাগরিকত্ব পাওয়ার আগে দেশে অবস্থানের সময়সীমা বাড়ানোর সুপারিশও করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত নিয়ম অনুযায়ী, সুইডিশ নাগরিকত্ব পেতে একজন বিদেশিকে বর্তমানে পাঁচ বছরের পরিবর্তে আট বছর সুইডেনে থাকতে হবে। এ ছাড়া সুইডিশ সমাজ ও মূল্যবোধ নিয়ে একটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ভাষা পরীক্ষাও দিতে হবে। এই পর্যালোচনাটি ২০২৩ সালে মধ্য ডানপন্থী সরকার শুরু করে।
অভিবাসনমন্ত্রী জোহান ফোরসেল ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে বলেন, ‘নাগরিকত্ব অর্জন করতে হবে, এটি শর্তহীনভাবে প্রদান করা যাবে না।
’
ফোরসেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নাগরিকত্ব বিভিন্ন পটভূমির মানুষের মধ্যে একটি সাধারণ সুইডিশ পরিচিতি গড়ে তুলতে সহায়তা করে। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুইডেনে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ এসেছে।’
২০১৫ সালে বড় অভিবাসী ঢেউয়ের সময় সুইডেনে বিপুলসংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীর আগমনের পর থেকে পরবর্তী বাম ও ডানপন্থী সরকারগুলো অভিবাসন ও আশ্রয়ের নিয়ম কঠোর করে।
অভিবাসনবিরোধী সুইডিশ ডেমোক্র্যাটদের সমর্থনে পরিচালিত প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসনের নেতৃত্বাধীন মধ্য ডানপন্থী সংখ্যালঘু সরকার ২০২২ সালে ক্ষমতায় আসার পর আরো কঠোর নিয়ম চালু করে।
ফোরসেল বলেন, ‘সুইডেনে যে মূল্যবোধগুলো প্রযোজ্য, তা নিয়ে সব সময় স্পষ্ট থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটি আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এখানে নারী-পুরুষের সমতা বিদ্যমান। আপনি ইচ্ছামতো বিয়ে করতে পারেন।
ছেলে ও মেয়ে—উভয়েরই সাঁতার কাটা ও ফুটবল খেলার অধিকার আছে। যদি আপনি এটি মেনে না নেন, তাহলে সুইডেন আপনার জন্য উপযুক্ত দেশ নয়।’
এদিকে পর্যালোচনায় ‘সৎ জীবনযাপনের’ শর্ত আরো কঠোর করার সুপারিশ করা হয়েছে। পর্যালোচনার প্রধান কিরসি লাকসো উটভিক বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে এর অর্থ, যারা কোনো ধরনের অপরাধ বা অসদাচরণ করেছেন কিংবা ঋণে জর্জরিত, তাদের সুইডিশ নাগরিকত্ব পাওয়া আরো কঠিন হবে।
একসময় সুইডেন নিজেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত ও নির্যাতিতদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বিবেচনা করত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে দেশটি নবাগতদের একীভূতকরণে সমস্যা অনুভব করেছে। সম্প্রতি অভিবাসন হ্রাসে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে আশ্রয়প্রার্থীদের শুধু অস্থায়ী বাসস্থানের অনুমতি প্রদান, পারিবারিক পুনর্মিলনের মানদণ্ড কঠোর করা এবং অইইউ নাগরিকদের জন্য কাজের ভিসার ক্ষেত্রে আয়ের প্রয়োজনীয়তা বাড়ানো।
সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডেস্ক /মিআচৌ