সিলেটে হঠাৎ করেই বেড়েছে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। মহানগর কিংবা গ্রাম-গঞ্জ সবখানে খুন-হামলার ঘটনা ঘটছে অহরহ। গত বিশ দিনে ৯ হত্যার খবর পাওয়া গেছে। এ যেন চারপাশে শুধুই অস্থিরতা।

 


পরিত্যক্ত শৌচাগারে মিলল নারীর অর্ধগলিত লাশ, বিছানায় ভাবির লাশ, দেবর পলাতক, এক রাতে দুই খুন, কিশোরকে গলা কেটে হত্যা এরকম ঘটনা শিরোনাম হয়েছে সংবাদ মাধ্যমে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের মধ্যে অস্থিরতা বেড়েছে। এই অস্থিরতা বিভিন্ন অপরাধকে উসকে দিচ্ছে। ঘটনা খুন পর্যন্তও গড়াচ্ছে।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকমে প্রকাশিত সংবাদগুলো বিশ্লেষণ করে জানা যায়- চলতি বছরের ১ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত ৯টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংবাদমাধ্যমে অপ্রকাশিত ঘটনাগুলো গণনায় নিয়ে আসলে এই সংখ্যা আরো বেশী হবে।

 

সর্বশেষ ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বড়লেখা উপজেলার বাড্ডা বাজারে ছুরিকাঘাতে নোমান আহমদ (৩৫) নামে যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। নিহত নোমান উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের রাঙ্গিনগর গ্রামের লেচু মিয়ার ছেলে। তিনি সুজানগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

 

১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জে এক রাতের মধ্যেই পৃথক স্থানে দুর্বৃত্তদের হাতে একজন ও ছিনতাইকারীদের হাতে একজন খুন হন। তারা দুজন হলেন- কৃষক মনির হোসেন ও ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক আকরাম হোসেন।

 

৩ জানুয়ারি হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জ পৌরসদরের বাঁশমহাল সংলগ্ন নৌ টার্মিনাল এলাকায় সরকারি পরিত্যক্ত একটি শৌচাগার থেকে অজ্ঞাত এক মহিলার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।রাত আটটায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে মরদেহের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মরদেহটি বেশ কয়েকদিনের আগের বলে ধারনা করা হচ্ছে।

 

৬ জানুয়ারি হবিগঞ্জের মাধবপুরে আসমা আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে। সকাল ৭টায় মাধবপুর পৌরসভার  গুমুটিয়া গ্রামের তার স্বামীর বাড়ির একটি বসতঘরের দরজা ভেঙ্গে আসমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ বিছানায় ছিলো, শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই বলে জানায় পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকে আসমার দেবর পলাতক রয়েছেন।

 

কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা-বাগানের ফাঁড়ি কুরঞ্জি এলাকার একটি পাহাড়ের ছড়া থেকে ১৬ জানুয়ারি দিপেন মুণ্ডা (৩৫) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। তিনি কুরমা চা-বাগানের কুরঞ্জি এলাকার প্রসাদ মুণ্ডার ছেলে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ বলছে, তাকে কেউ হত্যা করে ফেলে গেছে।

 

অপরদিকে, একই দিন সন্ধ্যা ৭টায় ওই উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা-বাগানের বাজার লাইনে এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে দেবরের হাতে ভাবি খুন হন। অভিযান চালিয়ে ৯ ঘণ্টা পর ঘাতক দেবর মঞ্জুর মিয়াকে (৪২) আটক করে পুলিশ। খুন হওয়া কারিমা বেগম (৪২) পাত্রখোলা চা-বাগানের পূর্বপাড়া দুই নম্বর এলাকার মর্তুজ মিয়ার স্ত্রী।

 

এ ছাড়াও এর আগে রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলেপুর গ্রামে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন স্বামী আজাদ বক্স (৬০)।

 

এদিকে, শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামে নাজমা বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন। তিনি পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের ফখরু মিয়ার স্ত্রী। পাওনা টাকা নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / মাহি-০১