ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের গার দো নর্ড কে  বলা চলে একখণ্ড বাংলাদেশ। এখানে এলে কেউ বুঝতে পারবে না যে এটা ইউরোপের কোন একটা সিটি।সত্যিই সেটি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে। ফ্রান্সের প্যারিস, লিল, তুলুস, স্টারবুকসহ বিভিন্ন শহরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বসবাস করেন। সেই সঙ্গে অন্যান্য শহরেও রয়েছে বাংলাদেশিদের বসবাস।
 

প্যারিসের গার দো নর্ড ছাড়াও সারসেল, ক্যাথসিমা, সেন্টডেনিস ,লা কর্ডনভ, সহ বিভিন্ন এরিয়াতে প্রচুর বাংলাদেশী বসবাস করেন।এসব স্থানে আস্তে আস্তে গড়ে উঠেছে, ফরাসি ভাষা স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, দোকান পাঠ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশীদের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐক্য সমুন্নত রাখতে বাংলাদেশী অ্যাসোসিয়েশন, ক্রিকেট ক্লাব। দেখে মনে হবে বিদেশে এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ।
 


প্রবীণ বাংলাদেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে আস্তে আস্তে বাংলাদেশীরা ফ্রান্সে আসতে শুরু করেছে। প্রথমে স্টুডেন্ট ভিসা, বা মিডিলিষ্টের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশীরা এসে আসন গ্ৰহন করে। তারপর ২০০৯ সাল থেকে তরুণ প্রজন্মরা প্যারিসে আসতে শুরু করলে বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে পরিবর্তন শুরু হয়। তরুণ প্রজন্মরা এসে ফরাসি ভাষা আয়ত্ত করতে শুরু করে। বিভিন্ন কলেজ, ইউনিভার্সিটি থেকে লেখাপড়া শেষ করে কমিউনিটিতে কাজ করতে থাকে।

এরপর ২০১৪ সাল থেকে কাজের মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীদের সরকারিভাবে বৈধতার ঘোষণা দিলে, সেই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি ফ্রান্সে আসে। বর্তমানে  ফ্রান্সে বাংলাদেশীদের সংখ্যা প্রায় দুই  লক্ষ হবে।
 

এছাড়া প্যারিসের বিভিন্ন গলিতে রয়েছে বাঙালিদের ব্যবসা-বাণিজ্যের নানা প্রতিষ্ঠান। আবাসিক হোটেল থেকে শুরু করে বার রেস্টুরেন্ট, ট্রাভেল এজেন্সি, মানি ট্রান্সফার, গ্রোসারি শপ ও সুপার মার্কেট। দেশের আমেজেই শিল্প-সংস্কৃতি, রাজনীতি, ধর্মচর্চাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে মুখর থাকে ‌‘বাঙালি পাড়া’ বলে খ্যাত প্যারিসের গার দো নর্ড।

এখানে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খৃস্টান সবার মধ্যে রয়েছে বন্ধুত্ব, ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের মেলবন্ধন। প্রবাসে থাকলেও এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা মুহূর্তের জন্যেও ভুলে যায় না মাতৃভূমি বাংলাদেশের কথা, বাংলা সংস্কৃতির কথা।
 

এখানে মহাসমারোহে উদ্‌যাপিত হয় জাতীয় অনুষ্ঠান, পহেলা বৈশাখ, একুশে ফেব্রুয়ারি সহ বাংলাদেশীদের নানাবিধ উৎসব।


 

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/নজমুল/এসডি-০১