সিলেটজুড়ে তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা এবং হিমেল বাতাসের মাঝে জীবনযাত্রা বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে। মাঘের শুরুতেই সিলেটে এমন শীতের প্রভাব দেখা দিয়েছে, যা বিশেষভাবে বিপাকে ফেলেছে নিম্ন আয়ের মানুষ ও ছিন্নমূলদের। গত ২ দিন ধরে সিলেটের তাপমাত্রা কমে গেছে এবং সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধানও অনেকটা সংকুচিত হয়েছে।

 


শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস—যার মধ্যে ব্যবধান ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


শীতের এই তীব্রতা বাড়ানোর সাথে সাথে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগও বেড়েছে। বিশেষ করে রিকশা চালক, নির্মাণ শ্রমিক, দিনমজুর এবং ফুটপাতে রাত কাটানো মানুষদের অবস্থা চরম কষ্টকর। ঘন কুয়াশা ও তীব্র ঠাণ্ডায় গরম কাপড় ছাড়া খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অনেক মানুষ। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন শিশু ও বৃদ্ধরা, যারা শীতে আক্রান্ত হয়ে নানা রোগের শিকার হচ্ছেন।

 

নগরীর আম্বরখানার নির্মাণ শ্রমিক আমিন মিয়া বলেন, "শীতের কারণে কাজ করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ঠাণ্ডা পানিতে হাতপা জমে যায়, কাজ করতে পারছি না।" শাহী ঈদগাহ এলাকার রিকশা চালক কবির আহমদ বলেন, "শীতের রাতে রিকশা চালানো অনেক কষ্টের। ঘন কুয়াশার কারণে রাতের বেলা অনেক সময় বিপাকে পড়তে হয়। কনকনে বাতাস তো আছেই, ঠাণ্ডায় শরীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।"

 

এদিকে, ঘন কুয়াশায় সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। বুধবার রাতে সিলেট নগরীর চৌকিদেখীতে সিএনজি অটোরিকশার চাপায় দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, ঘন কুয়াশার কারণে সিএনজি অটোরিকশাটি দ্রুতগতিতে এসে ওই দুই শ্রমিককে চাপা দেয়, যার ফলে ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।

 

সিলেট আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে শীতের প্রকোপ আরো বাড়তে পারে। আজ শুক্রবার সকাল থেকে কুয়াশা ও হিমেল বাতাসের কারণে নগর জীবনের শীতের অনুভূতি আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামীকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সড়ক যোগাযোগ, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং বিমান চলাচলে সাময়িক বিঘ্ন ঘটতে পারে।


এখনও পর্যন্ত সিলেটের রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে, তবে শীতের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম /সানি-৫