২০২৪ সালে তাপপ্রবাহ, ঝড়, বন্যা ও খরায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বাংলাদেশ। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব পড়েছে শিক্ষা খাতেও। জলবায়ু সংকটের কারণে বন্ধ রাখতে হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর প্রভাবে ঝরে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থী। 

 


বিশেষ করে সিলেটে বন্যার প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। তীব্র বন্যায় ব্যাপকভাবে অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে ছয় লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়েছে। 

 

ইউনিসেফ বাংলাদেশের হিসেবে গত বছর ১২ মাসের মধ্যে জলবায়ুজনিত কারণে সিলেট অঞ্চলে শিশুরা সব মিলিয়ে আট সপ্তাহ পর্যন্ত স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আর খুলনা, চট্টগ্রাম ও রংপুর—প্রতিটি জেলায় শিশুরা ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত স্কুল দিবস হারিয়েছে।

 

গতকাল শুক্রবার ইউনিসেফ বাংলাদেশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘লার্নিং ইন্টারাপটেড: গ্লোবাল স্ন্যাপশট অব ক্লাইমেট-রিলেটেড স্কুল ডিসরাপশন ইন ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে আবহাওয়াজনিত শিশুদের শিক্ষায় ব্যাঘাত ঘটনার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমবারের মতো এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ। এতে দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে তাপপ্রবাহ, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও অন্যান্য চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনাবলির কারণে দফায় দফায় স্কুল বন্ধ দিতে হয়েছে।

 

চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনাবলির কারণে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের তিন কোটি ৩০ লাখ শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। জাতিসংঘের শিশু তহবিল- ইউনিসেফের এক বিশ্লেষণে এই চিত্র উঠে এসেছে।

 

এতে বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে ২০২৪ সালে তাপপ্রবাহ, ঝড়, বন্যা ও খরার কারণে স্কুল বন্ধ হয়ে ৭৭টি দেশের অন্তত ২৪ কোটি ৭০ লাখ শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল ছিল দক্ষিণ এশিয়া।

 

বাংলাদেশে ২০২৪ সালের এপ্রিল ও মে মাসে দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ শিশুদের পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) ও হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করে, ফলে সারা দেশে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত স্কুলে ছুটি দিতে বাধ্য হয়। মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে বেশ কিছু জেলায় শিশুদের স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এরপর জুনে হয় তীব্র বন্যা, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শিশুদের শিক্ষার ওপর। বন্যায় সারা দেশে প্রায় ১ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ছিল ৭০ লাখ।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / সানি-৭