ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ইসমাইল মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধের লাশ পরিত্যক্ত ট্যাংকি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে স্বামী-স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।


তাদের কাছ থেকে ওই বৃদ্ধকে খুনের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্যও পাওয়া গেছে। আটক নারীর সঙ্গে দৈহিক মিলনের পর তার মেয়েকে জাপটে ধরায় বৃদ্ধকে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ।



নিহত ইসমাইল মিয়া উপজেলার লামা শরীফপুর গ্রামের মৃত উজির আলীর ছেলে। তিনি সন্তানের জনক।


শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর টানপাড়া গ্রামের এক পরিত্যক্ত বাথরুমের ট্যাংকি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।


পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ইসমাইল মিয়া নিখোঁজ ছিলেন।


তার পরিবারের লোকজন খোঁজে না পেয়ে শুক্রবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। এরই মধ্যে শুক্রবার বিকেল আড়াইটার দিকে স্থানীয় লোকজন হোসেনপুর টানপাড়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির বাথরুমের ট্যাংকির ভেতরে তার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।


পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক পরকীয়া প্রেমিকা জানায়, ইসমাইল মিয়ার সঙ্গে তার দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।


ইসমাইল মিয়া বিভিন্ন ছলে প্রায়ই তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় তার স্বামী বাইরে থাকায় ইসমাইল তার ঘরে প্রবেশ করে তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। তিনি যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট খেয়ে বেসামাল ছিলেন। প্রেমিকা একপর্যায়ে তাকে ঘর থেকে বের করে দিতে চেয়েছিলেন। এ সময় তার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৪ বছরের মেয়েকে ঘুমের মধ্যে জাপটে ধরে ইসমাইল।
এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ইসমাইলের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে ওই নারী পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর মেয়ের সহযোগীতায় লাশটি পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত বাড়ির বাথরুমের ট্যাংকিতে ফেলে দিয়ে আসেন। রাতে তার স্বামী ঘরে ফিরেন। তবে মা-মেয়ে স্বাভাবিক থাকেন।


তবে নিহতের ছেলে সাদ্দাম হোসেন জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘সুমন ও তার স্ত্রীসহ অজ্ঞাত খুনিরা আর্থিক কোনো কারণে তার বাবাকে খুন করেছে।’


আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বিল্লাল মিয়া জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খুনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত সন্দেহে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ডেস্ক /মিআচৌ