ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে অপেক্ষমান যাত্রীরা
পেনশন থেকে মাইলেজ ভাতা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে সারা দেশের ন্যায় সিলেটে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন রানিং স্টাফরা।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ভোর থেকে স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো ট্রেন। হঠাৎ ট্রেন চলাচল বন্ধে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও অফিসগামী যাত্রীরা। ট্রেন বন্ধ থেকে কেউ ফিরে গেছেন, আবার কেউ বিকল্প বাহন হিসেবে বাসে করে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।
এদিকে, ট্রেনের যাত্রীদের সুবিধার জন্য বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। তবে বাস না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
জানা যায়, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন প্রদান এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতিতে যান রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। এর ফলে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ার ঘোষনা দেয়া হয়।
হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। যাত্রীরা বলেন, রেল কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই জানতো তাদের এই কর্মসূচির কথা তাহলে টিকিট ছাড়লো কেন। ট্রেন বন্ধের বিষয়ে কোনো পূর্ব নির্দেশনা না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীরা। দাবি আদায়ের যাত্রী বা সাধারণ নাগরিকদের জিম্মি করাটা কতটুকু যৌক্তিক এমন প্রশ্ন তাদের।
সরেজমিন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই ট্রেন চলাচল বন্ধের খবর জানতেন না, স্টেশনে এসে ট্রেনের অপেক্ষায় বসে রয়েছেন। কিন্তু ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ার ফলে এখন পড়েছেন বিপাকে। ট্রেন চলবে না জেনে অনেকেই স্টেশন ছেড়ে চলে যান। তাছাড়া যাত্রী নিরাপত্তাসহ যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশের কড়া উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
চট্টগ্রামের যাওয়ার জন্য টিকেট কেটেছেন আমিনুল ইসলাম। পরিবার নিয়ে এসেছেন স্টেশনে। ট্রেন বন্ধ থাকা নিয়ে তিনি বলেন, শীতের মধ্যে সকাল সকাল অনেক কষ্ট করে স্টেশনে এসে দেখি ট্রেন চলছে না। জরুরী কাজে চট্টগ্রাম যেতে হবে তাই টিকিট কেটেছিলাম। তারা যদি এই কর্মসূচি জানতোই তাহলে কেন টিকিট বন্ধ করল না। টিকিট দেখে আমরা ভাবছি ট্রেন চলবে তাই টিকিটটা নিয়ে এখানে এসেছিলাম এখন তো ভোগান্তিতে পড়ে গেলাম।
শেখঘাটের বাসিন্দা রিমি আক্তার বলেন, দাবি-আন্দোলন থাকবে। সব কিছুরই একটা নিয়ম আছে। তবে তাদের দাবির জন্য যাত্রীদের জিম্মি করাটা কতটুকু যৌক্তিক। এটা মোটেও ঠিক নয়।
এদিকে, রেল স্টেশন কর্তৃপক্ষ মাইকে ঘোষণা করছেন, যারা অনলাইনে টিকিট কেটেছেন তারা অনলাইনে টিকিটের সমমূল্য টাকা ফেরত পাবেন। কোন প্রকার টাকা কাটা হবে না বলেও উল্লেখ করেন রেল কর্মকর্তারা।
সিলেট রেলওয়ে জানায়, সকাল থেকে সকল ট্রেন বন্ধ আছে। রানিং স্টাফদের দাবি দেওয়া পূরণ হলে বা আন্দোলন প্রত্যাহার হলে ট্রেন চলাচল আবার শুরু হবে। তবে আপাতত বন্ধ থাকবে। যাত্রীদের যারা অনলাইনে টিকিট কেটেছেন তারা অনলাইনের টাকা রিটার্ন পাবেন। এছাড়াও যারা কাউন্টারের টিকিট কেটেছেন তারা কাউন্টারে সমমূল্য টাকা ফেরত পাবেন।
ট্রেনের শিডিউল অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ৩০মিনিটে চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস, দুপুর ১২টায় ঢাকাগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকাগামী সুরমা মেইল, রাত ১০টায় চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ও রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ঢাকাগামী উদয়ন এক্সপ্রেস সিলেট ছেড়ে যাওয়ার কথা। কর্মবিরতি অব্যাহত থাকলে এসব ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেটভিউ২৪ডটকম / সানি-৫