সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার পাউবোর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ চলছে ধীর গতিতে। নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন হওয়া নিয়ে কৃষককুলে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা আর হতাশা। গত ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরুর কথা থাকলেও দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও এক টুকরি মাটিও পড়েনি উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের কালনার হাওরের ৩ নম্বর পোল্ডারের ৩৮ নম্বর পিআইসির শান্তিপুর ক্লোজারে। অপরদিকে খাসিয়ামারা নদীর বামতীরে ৪০ নাম্বার পিআইসির স্লুইচ গেটের ক্লোজারেও কাজ শুরু হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোয়ারাবাজার উপজেলাধীন কানলার হাওরের ৩৮ নম্বর পিআইসির শান্তিপুর ক্লোজারে এক টুকরি মাটিও পড়েনি এখনো। এর ১৭৬ মিটার ডুবন্ত বাঁধের ভাঙ্গা বন্ধকরণ ও পূণরাকৃতিকরণ কাজে বরাদ্দ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।
অন্যদিকে খাসিয়ামারা নদীর বামতীরে ৪০ নাম্বার পিআইসির ৩২০ মিটার ডুবন্ত বাঁধের ভাঙ্গা বন্ধকরণ ও পূণরাকৃতির কাজে বরাদ্দ ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। ওই বাঁধের স্লুইচগেট অংশের ক্লোজারটিতেও চোখে পড়েনি কাজের কোনো চিহ্ন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা বলছেন, ‘ নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু হলে এযাবৎ প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হতো । পাউবো ও পিআইসি সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণেই এখনো শুরু হয়নি কাজ।’
৩৮ নম্বর পিআইসি সভাপতি হুসাইন মোহাম্মদ এমরাজ বলেন, ‘ পিআইসি গঠনে অনিয়মের কারণে এখনো কাজ শুরু করতে পারিনি আমার পিআইসিতে। আমার অজান্তে আমার দেয়া কমিটিতে রদবদল করে অন্যদের ঢুকানে হয়েছে। তাই ইউএনও বরাবরে লিখিতভাবে ওই পিআইসি থেকে ইস্তফা দিয়েছি আমরা ছয় সদস্য।’
৪০ নাম্বার পিআইসি সভাপতি ইয়াকুব আলী বলেন, ‘ওই পিআইসির দক্ষিণ পাশের ভাঙনে মাটি ফেলার কাজ চলছে। এখানের কাজ শেষ করে স্লুইচ গেটের ক্লোজারে কাজ শুরু করবো।’
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন বলেন, ‘এখনো ক্লোজারের কাজ শুরু না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে কিভাবে? ক্লোজার দিয়ে পানি ঢুকে কৃষকদের ফসলহানি ঘটলে এর দায় এড়ানো অসম্ভব হবে। তাই এব্যাপারে পাউবো কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
পাউবোর দোয়ারাবাজারের উপসহকারি প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘৩৮ নম্বর পিআইসি নিয়ে একটু সমস্যা হলে আবার নতুন পিআইসি গঠিত হয়েছে। খুব শিগগির শান্তিপুর ক্লোজারে কাজ শুরু হবে। আর খাসিয়ামারা নদীর বামতীরে ৪০ নম্বর পিআইসির তিনটা পয়েন্ট। ইতোমধ্যে ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।’
৩৮ নাম্বার পিআইসিতে এখনো কাজ শুরু হয়নি কেনো জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু জানান, ‘এখানে তো কাজ শুরু হওয়ার কথা। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।’
সিলেটভিউ২৪ডটকম/তাজুল/এসডি-০২