গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে শুরায়ি নেজামের অধীনে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহত্তম জুমার নামাজ। দুপুর ১টা ৫৩ মিনিটে জুমার নামাজ শুরু হয়। নামাজের আগে খুতবা শুরু হয় ১টা ৪৩ মিনিটে। নামাজের ইমামতি করেন মাওলানা মোহাম্মদ যোবায়ের।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে জুমার নামাজে মূল ইজতেমা মাঠে জায়গা না পেয়ে মুসল্লিরা মাঠসংলগ্ন সড়ক, মহাসড়ক ও ফাঁকা জায়গায় নামাজ আদায় করেন।
এর আগে ফজর নামাজের পর বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। তাৎক্ষণিকভাবে তা বাংলায় অনুবাদ করেন মাওলানা নুরুর রহমান। পৌনে ১০টায় খিত্তায় খিত্তায় তালিমের আমল হয়। তালিমের আগে মোজাকেরা (আলোচনা) করেন ভারতের মাওলানা জামাল সাহেব। এ ছাড়া সকাল ১০টায় শিক্ষকদের বয়ানের মিম্বারে বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ফারাহিম। ছাত্রদের সঙ্গে নামাজের মিম্বারে বয়ান করেন প্রফেসর আব্দুল মান্নান, খাওয়াছদের (গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ) মাঝে টিনশেড মসজিদে বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আকবর শরিফ।
এ পর্যন্ত ৭২টি দেশের প্রায় দুই হাজার ১৫০ জন বিদেশি মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে এসে উপস্থিত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন শুরায়ি নেজাম তাবলিগ জামাতের মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান। তিনি বলেন, ইজতেমার আরও পাঁচ দিন বাকি আছে। এ সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে আরও বিদেশি মুসল্লি ইজতেমায় যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ ও তুরাগ নদের তীরে হাজারো মুসল্লির আনাগোনা। এর মধ্যে মূল ইজতেমা মাঠে বাঁশ ও চটের তৈরি শামিয়ানার নিচে অবস্থান করছেন হাজার হাজার মুসল্লি। তাদের কেউ বয়ান শুনছেন। কেউবা ব্যস্ত রান্না, অজু ও গোসলে। এর মধ্যেই দলে দলে মাঠে প্রবেশ করছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসল্লিরা। তাদের কারও মাথায়, কারও কাঁধে, আবার কারও হাতে একাধিক ব্যাগ, পোঁটলা। টঙ্গীর আশপাশের এলাকা থেকে আগত মুসল্লিদের হাতে জায়নামাজ, মাথায় টুপি। মূল বয়ান মঞ্চ থেকে জুমার খুতবা পাঠের সময় পুরো ইজতেমা ময়দানে সৃষ্টি হয় পিনপতন নীরবতা।
আগত মুসল্লিরা বলছেন, এত বড় জুমার নামাজ ইজতেমা ময়দান ছাড়া অন্য কোথায়ও হয় না। কার দোয়া, মনোবাসনা আল্লাহ কবুল করেন সেই কারণে এখানে নামাজ আদায় করা।
এবার শুরায়ি নেজামের অধীনে দুই পর্বে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইবরাহিম দেওলার বয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ইজতেমা শুরু হয়। প্রথম ধাপে অংশ নিয়েছেন ৪১ জেলা ও ঢাকার একাংশের মুসল্লি। এরপর ৩ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা। ২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-১২