গত ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় কাগজে-কলমে কোন দায়িত্ব না থাকার পরও সিলেটের বিশ্বনাথে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী পুত্রের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষক পিতার অবাদ বিচরণ ও প্রশ্নপত্র গণনায় উপস্থিত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।


পৌর শহরের নতুন বাজার এলাকাস্থ মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলম ফকিরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগটি পাওয়া গেছে।


মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রতে খায়রুল আলম ফকিরের এমন নিয়ম বহির্ভুত কাজ-কর্মে উপজেলার অন্যান্য স্কুলের শিক্ষকরা প্রকাশ্যে কিছু বলতে না পারলেও এসকল শিক্ষকদের মধ্যে চরম হাতাশা আর ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্কুলের বাইরেও এনিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলম ফকির অবৈধভাবে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ও পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অজান্তে নিজের বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিজের পুত্রকে নানান ভাবে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন। ছেলে উপজেলার সৎপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে। অথচ সে লেখাপড়া করেছে লেচু মিয়া স্কুল এন্ড কলেজে। শুধু তাই নয়, এসএসসি পরীক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের তালিকায় তার (খায়রুল আলম ফকির) নাম না থাকার পরও নিয়ম বহিভর্‚তভাবে নিজের প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রতে রয়েছে তার অবাদ বিচরণ। পরীক্ষার শুরুর আগে প্রশ্নপত্র গণনায়ও তিনি উপস্থিত থাকেন। এনিয়ে অন্য স্কুলের অনেক শিক্ষকদের মধ্যে ভেতরে ভেতরে চলছে নানা গুঞ্জন।
 

এদিকে আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বনাথে এসএসসি পরীক্ষার জন্য ৪টি কেন্দ্র ও ৪টি ভেন্যু রয়েছে। আর ওই ৪টি কেন্দ্রের মধ্যে মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহন করছে। যে কারণে পরীক্ষা চলাকালে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অথচ অনেক কেন্দ্রে কম শিক্ষার্থী থাকায় সেগুলোতে অনেক আসন ফাঁকাই থাকে। কারণ হিসেবে ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিলে বিদ্যালয়ের শতকরা পাশের সম্ভবনা বেশি থাকে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। আর সেজন্য প্রতি বছরই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নানান বাহানা করে পূর্বের কেন্দ্র থেকে নাম কাটিয়ে নিজেদের পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে আসছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার কামরুল ইসলাম এবং কেন্দ্রের সচিব ও জনকল্যান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বুরহান উদ্দিন অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, আজকের (১৫ এপ্রিল, মঙ্গলবার) পর থেকে পরীক্ষা চলমান অবস্থায় মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলম ফকির’কে পরীক্ষা কেন্দ্রতে আসতে বারণ করা হয়েছে।
 

নিজের উপর আসা অভিযোগগুলো মিথ্যা দাবি করে মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলম ফকির বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেন্দ্রের সচিব ও ট্যাগ অফিসারকে সহযোগীতা করে আমি চলে এসেছি।

এব্যাপারে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনন্দা রায় বলেন, বিষয়টির ব্যপারে অবগত হওয়ার পর ওই শিক্ষককে সাথে সাথে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রনঞ্জয়/এসডি-২১