ঠিকাদারের টেন্ডারের কাজের লাভের টাকায় এক পিস জিলাপি খেতে চাওয়াই কাল হলো কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ওসি মনোয়ার হোসেনের। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) তাকে ইটনা থানা থেকে জেলা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে৷


জেলা পুলিশ সুপার হাসান চৌধুরী সাক্ষরিত এক পত্রে এই তথ্য জানা যায়৷ একইসঙ্গে ইটনা থানার নতুন ওসি হিসেবে মো. জাফর ইকবালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷


 

সম্প্রতি একটি অডিও রেকর্ড সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে টেন্ডারের কাজের টাকায় জনগণকে নিয়ে জিলাপি খাইতে চেয়েছিলেন ওসি মনোয়ার হোসেন৷ এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশের পরে সারাদেশে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়৷


জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইটনা উপজেলা নেতা আফজাল হুসাইন শান্ত সরকারি টেন্ডারি পান। সেই কাজ করার পর বিল পাওয়ার আগেই লাভের টাকা থেকে তার কাছে জিলাপি খেতে চান কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেন। এ ঘটনায় জেলা জুড়ে তোলপাড় তৈরি হয়েছে৷


ভাইরাল হওয়া কথোপকথনে ওসি মনোয়ার হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘সেফটি সিকিউরিটি দিলামতো সারা জীবন। তোমরা যে ১৮ লক্ষ টাকার কাজ করে ১০ লক্ষ টাকা লাভ করলা, ১০ টাকার জিলাপি কিনে তো পাবলিকেরে খাওয়ালে না। খাইয়া যে একটু দোয়া কইরা দেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের। তোমার জায়গায় আমি হইলে সুদের উপরে টাকা আইনা আগে জিলাপি খাওয়াইতাম। দোয়াটা হইলো সবার আগে। পরেতো বিল পামু, তাই না?’


একপর্যায়ে ওসি আরও বলেন, ‘ঠিক আছে তাহলে, জিলাপির অপেক্ষায় রইলাম নাকি? না না, জিলাপি হইলেই হইব। এক প্যাঁচ আধা প্যাঁচ (এক পিস আধা পিস) জিলাপি দিলে হইব। বিভিন্ন পারপাসে হইলে পাবলিক খাইল আর কী, বোঝ না? এসময় ভুক্তভোগী ছাত্রনেতা বলেন, ‘বিল-টিল পাই, একটা অ্যামাউন্ট দেখবনে’। তার এ কথার উত্তরে ওসি বলেন, ‘ঠিক আছে’।’


ভুক্তভোগী ছাত্রনেতা আফজাল হুসাইন শান্ত বলেন, ‘আমি ইটনা উপজেলার বলদা হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪৮০ মিটার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ পাই টেন্ডারের মাধ্যমে। কাজ শেষ হওয়ার পরে থানায় গেলে তিনি (ওসি) জিলাপি খেতে টাকা চাইতেন। তখন রেকর্ড করতে পারিনি। পরে ওসির সঙ্গে ফোনে আমার কথা হলে তিনি আমার কাছে ফসল রক্ষা বাঁধ করে যে লাভ হয়েছে, সেখান থেকে জিলাপি খেতে চান।’


ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি সরকারি কাজ পেয়েছি টেন্ডারের মাধ্যমে। এখানে ওসি কীভাবে জিলাপি খেতে চাইতে পারেন না? আমার কাছে যদি জিলাপি খাইতে চাইতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষ কতটা শান্তিতে আছে বুঝতে পারছেন?’


এ বিষয়ে ইটনা থানার ওসি মনোয়ার হোসেন বলেন, মজার ছলে ওই ব্যক্তির কাছে জিলাপি খেতে চেয়েছি।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডেস্ক /মিআচৌ