শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) নবনির্মিত সমাজবিজ্ঞান ভবন নির্মাণের প্রায় এক বছর অতিক্রম হয়ে গেলেও লিফট না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বয়স্ক শিক্ষক ও শারীরিকভাবে অক্ষম শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে এই ভবনে ৪টি বিভাগের (সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, অর্থনীতি ও পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগ) শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ৪টি বিভাগের ৮২ জন শিক্ষক ও প্রায় ১৫শ’ শিক্ষার্থী নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তবে পাঁচতলা এই ভবনে লিফট না থাকায় বয়স্ক ও অক্ষম শিক্ষার্থীদের জন্য চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। ভবনের চার বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষক পঞ্চাশোর্ধ। ফলে সিঁড়ি বেয়ে প্রতিদিন উপর উঠা কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন অধিকাংশ শিক্ষক।
বয়স্ক ও অসুস্থ শিক্ষকদের পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শারীরিকভাবে অক্ষম শিক্ষার্থীরাও। দুইজন শারীরিক অক্ষম শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, নিয়মিত ক্লাস করার পাশাপাশি অ্যাকাডেমিক বিভিন্ন কাজে বিভাগের অফিসে যেতে হয় কিন্তু সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠা সম্ভব হয় না। অনেক সময় তাদেরকে ক্লাস মিস দিতে হয় বলেও জানান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, ভবনটির এক পাশে লিফট লিফট স্থাপনের কথা থাকলেও লিফটের জন্য বরাদ্দ বাজেটের টাকা দিয়ে তৎকালীন প্রশাসন রেজিস্ট্রার ভবনে লিফট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের লিফটের কাজ স্থগিত হয়ে যায়।
পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাজমুল হাসান বলেন, ‘নতুন বিল্ডিংয়ে লিফট স্থাপন খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে আমাদেরকে ৫ তলায় গিয়ে ক্লাস করতে হয়। শুধু ক্লাসই নয় বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে ৪-৫ বার উপর-নীচে যাওয়া আসা করতে হয়, যা সত্যিই খুব কষ্টসাধ্য। বিশেষ করে আমাদের অনেক ছাত্রী সহপাঠী নিয়মিতই ভীষণ সমস্যা অনুভব করছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমাদের এক জুনিয়র শিক্ষার্থী ৫ তলায় ক্লাসে উঠতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন অনেক কষ্ট করে তাকে নিচে নামিয়ে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হয়। এই ধরনের ঘটনা এড়াতে এবং সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সুবিধার্থে দ্রুত লিফট স্থাপন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. তাহমিনা ইসলাম বলেন, ‘অনেকদিন ধরে আমার হার্টের সমস্যা। প্রতিদিন চার তলায় সিঁড়ি বেয়ে যাওয়া আসা করে হার্টের সমস্যা আরও বেড়ে যাচ্ছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে দ্রুত লিফট স্থাপন করা জরুরি।’
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. লায়লা আশরাফুন বলেন, ‘লিফট না থাকার কারণে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। আমার নিজেরও বয়স বেড়েছে ফলে উপরে উঠতে কষ্ট হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু লিফট স্থাপনের জায়গা করা আছে এখন শুধু স্থাপন করা বাকি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশাকরি দ্রুত এটা সমাধান করবে।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে কল দিয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ মোফাজ্জল / সানি /এসডি-১৩