রাজশাহী কলেজে এবার ক্লাস করতে এসে মো. সাগর রেজা (২২) নামে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক কর্মী আটক হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে কলেজ শাখা ছাত্রদল ও শিবিরের নেতাকর্মীরা তাকে আটক করে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করে।

এরআগে, মঙ্গলবার রাজশাহী কলেজে পরীক্ষার ভাইভা দিতে আসা ছাত্রলীগের অপর কর্মী মো. মাজহারুল ইসলাম আশিককে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।


জানা গেছে, আটক ছাত্রলীগ কর্মী মো. সাগর রেজা রাজশাহী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার উদয় সাগর গ্রামের মো. আলমগীরের ছেলে। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের আগে তিনি কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসের (ই-ব্লকের) আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মো. সাগর রেজা বৃহস্পতিবার কলেজে ক্লাস করতে আসেন। এ সময় ছাত্রদল ও শিবির কর্মীরা তাকে চিনতে পেরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার ফোনের ফেসবুকে বিভিন্ন উস্কানিমূলক পোস্ট দেখতে পান তারা। পোস্টে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে আওয়ামী লীগ ও কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে এবং ছাত্রলীগের মিছিলগুলোতে তাকে সামনের কাতারে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে রাজশাহী কলেজে ১৬ জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার দিনেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। এছাড়া তার ফেসবুক প্রোফাইলে সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রহনপুর পৌর শাখা, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি লীগ, চাঁপাইনবাগঞ্জ, সাংগঠনিক সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ গোমস্তপুর উপজেলা শাখা, সাংগঠনিক সম্পাদক বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ গোমস্তপুর উপজেলা শাখাসহ বিভিন্ন পদবীর ট্যাগ তার এখনো যুক্ত রয়েছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ (আবির) বলেন, রাজশাহী কলেজ ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী কলেজে ক্লাস করার জন্য ক্লাসে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে কলেজ ছাত্রদল ও শিবিরের নেতাকর্মীরা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাসিক দত্ত ও আশিকের ছায়া তলে তিনি রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালাতো। কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে মারধর করতো। আমরা তাকে চিনতে পেরে সাধারণ শিক্ষার্থীর মারধরের হাত থেকে বাঁচিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।

আটকের বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ছাত্রলীগ কর্মী মো. সাগর রেজাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ফলে এখনো আমার কাছে এসে পৌঁছায়নি। আসলে যাচাই করে দেখবো।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরডি