সারাদেশের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ট্রাস্ট (BDDT) মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে সিলেট প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে পরিদর্শনে করেছেন কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আগত প্রতিনিধি দল।
বুধবার (১৪ মে) সকাল ১১টায় পরিদর্শন প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর শবনম ফেরদৌসী, প্রোগ্রাম অফিসার সাবরিনা তাসনীম। প্রতিনিধি দলকে সার্বিক সহযোগিতা করেন স্থানীয় কনসালট্যান্ট (ফিজিওথেরাপি) ডা. নীলিমা আহমদ।
পরিদর্শন শেষে শবনম ফেরদৌসী বলেন, “আমরা সারাদেশে বিভিন্ন জেলা পরিদর্শন করে প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্রগুলোর বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। কোথায় কী ঘাটতি রয়েছে এবং কোন কোন বিষয়ে উন্নয়ন দরকার, তা নির্ধারণ করে একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেইজ প্রস্তুত করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই তথ্যের ভিত্তিতে জাতীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। সিলেট অফিস পরিদর্শনে দেখা গেছে, শিশুদের জন্য খেলাধুলার কোনো ব্যবস্থা নেই এবং বাথরুমে প্রতিবন্ধীবান্ধব সেফটি রডের অভাব রয়েছে, যা তাদের দৈনন্দিন ব্যবহারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
সাবরিনা তাসনীম বলেন, “আমরা শুধু কাগজে কলমে নয়, সরেজমিনে এসে প্রতিটি সেক্টর ঘুরে ঘুরে পর্যালোচনা করেছি। সেবার পরিধি, থেরাপি রুমের অবস্থা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির পরিমাণ, সেবাপ্রাপ্তদের অভিজ্ঞতা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মীদের মতামত সবকিছুই নথিভুক্ত করেছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, মাঠপর্যায়ের প্রকৃত চাহিদার ভিত্তিতে একটি বাস্তবসম্মত ও টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা, যাতে করে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়।”
ডা. নীলিমা আহমেদ বলেন, “ঢাকা অফিসের প্রতিনিধি দল অত্যন্ত আন্তরিকভাবে সেবা কেন্দ্রটি ঘুরে দেখেছেন এবং বাস্তব পরিস্থিতি সরাসরি অবলোকন করেছেন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে কিছু অভাব-অভিযোগের কথা জানিয়ে আসছিলাম। যেমন—শিশুদের মানসিক বিকাশে উপযোগী পরিবেশের অভাব, চলাচলের উপযোগী অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা এবং প্রয়োজনীয় থেরাপি যন্ত্রপাতির ঘাটতি। তারা সেগুলো গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেছেন। আশা করি, ভবিষ্যতে এসব বিষয় উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হবে।”
এই পরিদর্শনের মাধ্যমে শুধু সিলেট নয়, বরং দেশের সব প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্রগুলোর বাস্তব চিত্র তুলে এনে জাতীয় পর্যায়ে আধুনিকায়ন, সেবার বিস্তার এবং নীতিগত পরিকল্পনা তৈরির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হলো। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এটি সরকারের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর কল্যাণে একটি সময়োপযোগী এবং বহুমাত্রিক অগ্রগতি নিশ্চিত করবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/জাহিদ/এসডি-১৫