সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে যাত্রীবেশি ছিনতাই ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেড়েছে। সিএনজি অটোরিকশার যাত্রীবেশি অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে নিঃশ্ব হচ্ছেন অনেকেই। অজ্ঞান পার্টির এমন অপরাধের সংখ্যা দিন দিন ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে অহরহ টাকা খোয়া যাচ্ছে জনসাধারণের। এমনই একজন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান। তিনি সিএনজি অটোরিকশার যাত্রীবেশি অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ২লাখ ৫৫ হাজার টাকা হারিয়ে হারান। আরিফুর ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় নয়াবাজারের মোবাইল ও বিকাশের ব্যবসায়ী।
ভুক্তভোগীর স্বজন হাফিজুল ইসলাম জানান, রবিবার (১৮ মে) আরিফুর রহমান সিলেটের কয়েক জায়গা থেকে ব্যবসার টাকা তুলে সন্ধ্যায় ফেঞ্চুগঞ্জে ফিরে আসার জন্য সিলেট দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ চত্বরে গাড়ির অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় একটি সিএনজি অটোরিকশা উনাকে ডাক দিয়ে বলে ফেঞ্চুগঞ্জ গেলে আসেন দ্রুত ছেড়ে দেব। উনি প্রথম যাত্রী হিসাবে সিএনজি অটোরিকশায় ওঠেন। গাড়ির অল্প কয়েক গজ এগিয়ে আরোও দু’জন যাত্রী তুলে। এর পরে রাত সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মোগলাবাজার থানার পরে লতিফা শফি চৌধুরী কলেজের সামনের সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়!
উদ্ধারকারী জামিল আহমেদ মোটরসাইকেল যোগে এ সড়ক ধরে ফিরছিলেন। মানুষের জটলা দেখে তিনি এগিয়ে গেলে দেখতে পান এক লোক অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। স্থানীয়দের সহায়তায় অজ্ঞান লোককে স্থানীয় দক্ষিণ সুরমা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভুক্তভোগী আরিফুর রহমানের জ্ঞান ফিরলে তিনি বলেন, সিএনজি অটোরিকশা ওঠার পর আরোও দু’জন লোক ওঠে। গাড়ি চলতে শুরু করে। অল্প দূরে শিববাড়ি বাজার পর্যন্ত তিনি ঠিক ছিলেন এর পরে আর কিছু বলতে পারেন না। পরে জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখতে পান তিনি হাসপাতালের বিছানায়৷ তার সাথে থাকা ২লাখ ৫৫হাজার টাকা ও ২টি স্মার্ট ফোন নেই বলে জানান তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বেশ কিছু দিন থেকে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ রোডে এরকম ছোটবড় অপরাধ ঘটছে। এর আগে ফেঞ্চুগঞ্জ কটালপুর বাজারের এক ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই হয়। হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে ৫জন করে যাত্রী নিয়ে সিএনজি অটোরিকশাগুলো ফেঞ্চুগঞ্জ আসে। এর মধ্যে অপরাধীরা যাত্রীবেশ নিয়ে সিএনজি অটোরিকশায় ওঠে ও সুযোগ বুঝে পকেট কাটে বা দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা, মোবাইল ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। চক্রের সাথে জড়িত সিএনজি অটোরিকশা চালক খালি গাড়ি নিয়ে যাত্রীর জন্য হাকডাক করেন। টার্গেট করা একজন যাত্রী উঠার পর চক্রের অন্য ২বা ৩ জন ফেঞ্চুগঞ্জ যাবে বলে গাড়িতে উঠে গাড়ি ছেড়ে দেয়। চলতি পথে সুবিধাজনক স্থানে টার্গেট করা যাত্রীকে অসহায় করে ছিনতাই করে চপ্পট দেয় তারা। এই অপরাধ নির্মুল করতে ফেঞ্চুগঞ্জ, মোগলাবাজার,দক্ষিনসুরমা থানা পুলিশ ও সিএনজি অটোরিকশা শাখাগুলোর নেতৃবৃন্দদের সচেতন উদ্যোগের দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষজন। এই বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা তুলছেন সচেতন মহল।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জ রোডে সন্ধ্যার পর থেকে পুলিশের একটি টহল দল হুমায়ুন চত্ত্বর থেকে মোগলাবাজার পর্যন্ত সার্বক্ষনিক তদারকি করবে। রাস্তায় কোনো মানুষ ও সিএনজি অটোরিকশা সন্দেহভাজন মনে হলে তাদের তল্লাসি করা হবে। অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা রুখতে পুলিশ সবসময় সজাগ দৃষ্টি রাখবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ফরিদ/ এহিয়া ০২