ফাইল ছবি
ভিন্ন নামে ‘পোষ্য কোটা’ বহাল রাখতে সুপারিশ করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কমিটি।
গত ৩০ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর কোটা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সুপারিশপত্র দেন ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. বদিউজ্জামান ফারুক ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, উপাচার্য বরাবর প্রেরিত সুপারিশপত্রে কোটা সংস্কারের পক্ষে মতামত দেয় ভর্তি কমিটি এবং পোষ্য কোটা ভর্তি'র স্থলে ‘সোসাইটিস মেরিট অ্যালোকেশন (এসএমএ)’ লিখার বিষয়টি উত্থাপন করেন। এতে পাঁচ ধরনের কোটা রাখার বিষয় বলা হয়। এ কোটা সমূহ হলো- ‘এথনিক মেরিট অ্যালোকেশন, ডিজেবল মেরিট অ্যালোকেশন, টি-লেবার মেরিট অ্যালোকেশন, স্পোর্টস মেরিট অ্যালোকেশন এবং সাস্ট কমিউনিটি মেরিট অ্যালোকেশন।
এদিকে পোষ্য কোটা সহ সকল অযৌক্তিক কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮০তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কোটায় ভর্তি স্থগিত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য শুধুমাত্র কোটা রাখা যেতে পারে, কিন্তু পোষ্য কোটায় যারা ভর্তি হয়, তারা সবাই উচ্চশিক্ষিত পরিবার থেকে আসে। এটা মারাত্মক বৈষম্য।
কোটা স্থগিতের পর প্রশাসন থেকে বলা হয়, ভর্তিতে কোটার ব্যবহার নিয়ে ভর্তি কমিটি অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে যৌক্তিক কোটা রাখা নিয়ে একটি সুপারিশ করবে, সেই আলোকে ভর্তির ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ভর্তি কমিটি অংশীজনদের সাথে কথা বলেও সুপারিশ করেছে ঠিকই, তবে শিক্ষার্থীদের দাবিকে তোয়াক্কা করেননি ভর্তি কমিটি। পোষ্য কোটাকে শিক্ষার্থীরা অযৌক্তিক বলে বাতিল চাইলেও ভর্তি কমিটি নতুন নামে পোষ্য কোটাকে বহাল রাখতে সুপারিশ করেছেন।
এদিকে পোষ্য কোটা বহাল রাখতে উপাচার্যের সাথে বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একাধিক সূত্রমতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষকে সাথে নিয়ে কথা বলতে কর্মকর্তা, কর্মচারীরা উপাচার্যের সাথে দেখা করতে যায় বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অযৌক্তিক কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকল অযৌক্তিক কোটা বাতিলের দাবি জানিয়েছিলাম। পোষ্য কোটা অবশ্যই অযৌক্তিক কোটা। এখন যদি এ কোটাকে ভিন্ন নামে চালু করা হয় সেটা হবে গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষাবিরোধী। যদি এ কোটা আবার চালু হয় তাহলে আমার আবার মাঠে নামবো।’
এ বিষয়ে ২০২৪-২৫ সেশনে ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কোটায় কিছু নাম পরিবর্তন করে ভর্তির ব্যাপারে আমরা একটা সুপারিশপত্র দিয়েছি। আজ অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল কিন্তু হয়নি। পরবর্তী অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চূড়ান্ত হবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম বলেন, ‘তারা (ভর্তি কমিটি) আমাদের কাছে একটি সুপারিশপত্র পাঠিয়েছে। তাছাড়া এখানে অনেক কর্মকর্তা এবং শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে, তাদেরও একটা আশা থাকে ভর্তি করানোর। আমরা আগামী অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে সেটা বিবেচনা করে দেখবো।’
সিলেটভিউ২৪ডটকম/মোফজ্জল/ইকে