প্রকাশিত: ১১ মার্চ, ২০২৩ ২০:০৩ (সোমবার)
জকিগঞ্জে ‌‘মাওলানা ফখরুল ইসলাম ট্রাস্ট’র বৃত্তি প্রদান

সিলেটের জকিগঞ্জে মাওলানা ফখরুল ইসলাম ট্রাস্টের বৃত্তি, সনদ ও হিফয শাখার পাগড়ি বিতরণ করা হয়েছে।
 

বৃত্তি বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আঞ্জুমানে আল ইসলাহ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বলেন, মাওলানা ফখরুল ইসলাম ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদেরকে বই, কিতাব প্রদানসহ নানাভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এ ট্রাস্টের মাধ্যমে পূর্ব সিলেটের মাদ্রাসার শিক্ষায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে।
 

মাদ্রাসায় বৃত্তি চালু করায় শিক্ষার্থীরা উৎসাহিত হয়ে ঝরে পড়ার হার কমেছে। মাদ্রাসা শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে মাওলানা ফখরুল ইসলাম (রহ.) এর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি সত্যিকারের আল্লাহ প্রেমিক ও রাসুল (সাঃ) এর খাটি অনুসারী হিসেবে সারাজীবন অতিবাহিত করেছেন। বর্তমান যুগে তাঁর মতো জ্ঞানী প্রজ্ঞাবান আল্লাহওয়ালা গুণীজণ কম আছেন। কর্মজীবনে তিনি বিলেতে গিয়েও এলাকার গরীব, দুঃখী অসহায় মানুষের খবর নিয়মিত রাখতেন। সবসময় মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসার নিয়ে মগ্ন থাকতেন। মাওলানা ফখরুল ইসলাম (রহ.) পবিত্র ওমরাহ হজ্বে গিয়ে ইন্তেকাল করে ইহকাল শেষ হয়েছে। আল্লাহর মহিমায় তিনি তাঁর অবিস্মরণীয় কীর্তির মধ্য দিয়ে চির জাগরুক থাকবেন। প্রতিটি ধুলিকণা তাঁর বিরহে কাঁদবে ও স্মরণ করবে তাঁর দ্বীনের মেহনতকে। মাদ্রাসা শিক্ষা ও কুরআন, হাদীসের আলো ছড়িয়ে দিতে তিনি আমৃত্যু কাজ করেছেন। তাঁর স্বপ্ন পূরণে আলেম সমাজ কাজ চালিয়ে যেতে হবে। ইসলামের একজন প্রকৃত খাদিম হিসেবে মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁকে পরকালে উত্তম বদলা দান করবেন।
 

শনিবার কাজলসার ইউপির মঙ্গলশাহ গ্রামে মাওলানা ফখরুল ইসলাম (রহ.) এর প্রতিষ্ঠিত রুফিজ আলী শাফাতুননেছা লতিফিয়া এতিমখানা ও হিফজুল কুরআন মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে ট্রাস্টের ২১ তম বৃত্তি পরীক্ষার সনদ বিতরণ এবং রুফিজ আলী শাফাতুননেছা লতিফিয়া এতিমখানা ও হিফজুল কুরআন মাদ্রাসার দস্তারবন্দি মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

সকাল ১১টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে দুটি অধিবেশনে বিকেল ৩টা অনুষ্ঠিত হয়। বৃত্তি বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্টের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান চৌধুরী।
 

মাওলানা কায়েস মাহমুদ চৌধুরীর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে হিসাব নিকাশ পেশ করেন ট্রাস্টের যুগ্ম সচিব তৈয়ব আলী বালিকা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা জামিল আহমদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন- জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, ট্রাস্টের সচিব ও জকিগঞ্জ ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুস সবুর।

বক্তব্য দেন অধ্যাপক বাসিত ইবনে হাবীব, ট্রাস্টের কোষাধ্যক্ষ মাওলানা ইমাদ উদ্দিন, প্রভাষক মাওলানা এমাদ উদ্দিন, আল ইসলাহ নেতা মাওলানা কাজী হিফজুর রহমান, প্রভাষক মাওলানা সাদিকুর রহমান, মাওলানা আব্দুর রকিব, মাওলানা নেজাম উদ্দিন, রাজনীতিবিদ এমএজি বাবর, প্রধান শিক্ষক হাফিজ মাওলানা মোহাম্মদ আলবাব হোসেন, আল ইসলাহ নেতা মাওলানা জুবায়ের আহমদ প্রমুখ।
 

ট্রাস্টের সচিব অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম জানান, এ বছর জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার ৫ম থেকে দশম শ্রেণি ও হিফজ বিভাগসহ মোট ১৯০জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
 

এর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে ২৮ জন, প্রথম গ্রেডে ৪৮ জন, সাধারণ গ্রেডে ১১৪ জন বৃত্তি ও সনদ লাভ করেন। ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্তদেরকে ১৫শ, প্রথম গ্রেডে ১২শ এবং সাধারণ গ্রেডে ১ হাজার টাকা হারে বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। এবারের পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৪০ জন বৃত্তি লাভ করায় জকিগঞ্জ ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসাকে ১০ হাজার টাকা পুরষ্কার দেয়া হয়। ১৯৯৯ সালে ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। এবার ট্রাস্টের ফান্ড থেকে শিক্ষার্থীদেরকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে ২ লক্ষ ১৩ হাজার ৬০০ টাকা এবং এতিমখানা ও ডিসপেনসারিতে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/হাছিব/এসডি-১৭